রাহুলকে ইস্তফা পাঠালেন সিধু!

গত মাসের ১০ তারিখের ঘটনা। আর আজ নিজের টুইটারে পঞ্জাবের মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার যে চিঠি জনসমক্ষে আনলেন সিধু, সেটির তারিখও ওই ১০ জুন। ইস্তফা অবশ্য তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ কিংবা রাজ্যপালকে দেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৪:০১
Share:

নভজ্যোৎ সিংহ সিধু।—ছবি পিটিআই।

ইস্তফা দেওয়ার পরে দলের কোনও নেতার সঙ্গেই দেখা করছিলেন না রাহুল গাঁধী। কিন্তু তার মধ্যেই দেখা করতে রাজি হয়েছিলেন নভজ্যোৎ সিংহ সিধুর সঙ্গে। মূলত বোন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার অনুরোধে।

Advertisement

গত মাসের ১০ তারিখের ঘটনা। আর আজ নিজের টুইটারে পঞ্জাবের মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফার যে চিঠি জনসমক্ষে আনলেন সিধু, সেটির তারিখও ওই ১০ জুন। ইস্তফা অবশ্য তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ কিংবা রাজ্যপালকে দেননি। দিয়েছেন রাহুল গাঁধীকে। আক্ষরিক অর্থে যে ইস্তফার কোনও মানেই নেই। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ায় সিধু আরও একটি টুইট করে জানান, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকেও তিনি ইস্তফা পাঠাচ্ছেন। যদিও আজ বিকেল পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছে, সিধুর তরফে কোনও ইস্তফাপত্র আসেনি।

ক্যাপ্টেনের সঙ্গে সিধুর বিবাদ নতুন নয়। গোটা লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যেখানে মুখ থুবড়ে পড়েছে, সেখানে পঞ্জাবে দাপট অনেকটা ধরে রাখতে পেরেছে দল। সেটি মূলত ক্যাপ্টেনের দৌলতেই। কিন্তু তুলনায় শহরে খারাপ ফলের জন্য ক্যাপ্টেন দায়ী করেন সিধুকেই।

Advertisement

অভিযোগ, সিধু নগরোন্নয়ন দফতরে ভাল কাজ করেননি বলেই এই হাল। মুখ্যমন্ত্রী গত ৬ জুন মন্ত্রিসভার রদবদল করে সিধুর দফতর কেড়ে তাঁকে বিদ্যুৎ দফতরের দায়িত্ব দেন। কিন্তু সিধু বলেন, “শহরে খারাপ ফলের জন্য আমাকে দায়ী করা ঠিক নয়।” এই বলে এক মাস ধরে নতুন দফতরের দায়িত্বও নেননি।

এই রদবদলের চার দিনের মাথাতেই সিধু দিল্লি এসে রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কাছে নালিশ জানান। আহমেদ পটেলকে পঞ্জাবের দুই নেতার বিবাদ মেটানোর দায়িত্ব দেন রাহুল। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। সেই দিনই রাহুলের কাছে পঞ্জাবের মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন সিধু। এর কয়েক দিন পরে কংগ্রেসের পাঁচ মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠান রাহুল। সেই বৈঠকে ক্যাপ্টেন আলাদা করে কথা বলেন রাহুলের সঙ্গে। সূত্রের দাবি, সিধুর ব্যাপারে পাল্টা নালিশ জানান অমরেন্দ্র সিংহ। যার ফলে রাহুল কিংবা প্রিয়ঙ্কার পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা হয়নি। কারণ, ক্যাপ্টেনের বিষয়ে খুব একটা নাক গলান না তাঁরা। পঞ্জাবে বিধানসভা ভোটের আগে প্রশান্ত কিশোরকে কাজে লাগানোর কথা ভেবেছিলেন রাহুল। কিন্তু অমরেন্দ্র তাঁকে পঞ্জাবে ঘেঁষতে দেননি।

এক মাস ধরে সিধু তাঁর দফতরের দায়িত্ব না-নেওয়ায় বিজেপিও সরব হয়েছিল। অমরেন্দ্রকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, “সিধুর ব্যাপারে উপযুক্ত সময়েই জানতে পারবেন।”

প্রশ্ন হল, ইস্তফার পরে সিধু কী করবেন? প্রাক্তন এই ক্রিকেটারকে বিজেপিতে এনেছিলেন অরুণ জেটলি। কিন্তু বিজেপি ছেড়ে তিনি যে ভাবে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন, তাতে অনেকেই বিরক্ত। ঘনিষ্ঠ মহলে জেটলি বলেছিলেন, “পিঠে ছুরি মেরেছেন সিধু।” কংগ্রেসে যাওয়ার আগে কেজরীবালের সঙ্গে দর কষাকষি করেছিলেন সিধু। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রফা না-হওয়ায় প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে যোগাযোগ করে কংগ্রেসে পাড়ি দেন।

আম আদমি পার্টির পঞ্জাবের নেতা হরপাল সিংহ চীমা অবশ্য আজ সিধুকে তাঁর দলে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু একটি সূত্রের দাবি, বিজেপিতে ফিরে আসারও চেষ্টা করছেন সিধু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন