ধৃতদের ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
নিট পরীক্ষায় জালিয়াতির তদন্তে নেমে একটি চক্রের খোঁজ পেল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। অভিযান চালিয়ে গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার নয়ডা থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট)-সহ অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম বিক্রমকুমার শাহ, ধর্মপাল সিংহ এবং অনিকেত কুমার। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-র ৩১৮, ৩১৯, ৩৩৬, ৩৩৭, ৩৩৮, ৩৪০ এবং ৬১(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা জানতে এখনও তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। এসটিএফ অভিযুক্তদের কাছ থেকে ১০টি মোবাইল ফোন, দু’টি আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, পাসপোর্ট, চেক বই-সহ নানা নথি এবং অপরাধমূলক প্রমাণ বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে একটি কম্পিউটার এবং একটি গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
গত ৩ মে প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত এসপি রাজকুমার মিশ্র এবং ডিএসপি নবেন্দু কুমারের তত্ত্বাবধানে নয়ডার সেক্টর ৩-এ অবস্থিত এই চক্রের অফিসে অভিযান চালায় এসটিএফের নয়ডা শাখা। গোপন সূত্রে আগে থেকে খবর ছিল যে, চক্রের সদস্যেরা বেছে বেছে নিট পরীক্ষার্থীদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। তার পর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পাশ করিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হত। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, ৩০ বছর বয়সি বিক্রম বিহারের দারভাঙ্গার বাসিন্দা। ২০১১ সালে বায়োটেকনোলজি পড়তে চেন্নাইয়ের বিনায়ক মিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বিক্রম। সেখানেই অনিকেতের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। ক্রমে দু’জন মিলে ৩০ শতাংশ লাভের বিনিময়ে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার ব্যবসা করতে শুরু করেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর দিল্লি চলে যান বিক্রমেরা, সেখানে তাঁদের সঙ্গে আলাপ হয় ধর্মপালের। তার পর তিন জন মিলে ‘অ্যাডমিশন ভিউ’ নামে একটি ভুয়ো সংস্থা খুলে নিট পরীক্ষার্থীদের টোপ দেওয়া শুরু করেন। প্রশ্ন ফাঁস এবং ওএমআর প্রতিস্থাপনের জন্য প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হত।
প্রসঙ্গত, রবিবারই সারা দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে নিট-ইউজি। রবিবারও জালিয়াতির অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল রাজস্থান পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ। চলতি বছরের শুরুতেও নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। তার পরেই এ ধরনের ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ করে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। অভিযোগ জানানোর জন্য একটি বিশেষ পোর্টালও চালু করেছিল তারা। সেই আবহেই নতুন করে জালিয়াতির খবর প্রকাশ্যে এল।