বিল পাশ, আধার ছাড়ার পথ নেই

আধার প্রকল্প ছেড়ে আসার কোনও পথই আজ পাশ হওয়া সংশোধনী বিলে রাখা হয়নি। মূল আধার আইনেও তা ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি, শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ঘুরপথে ব্যাঙ্ক-মোবাইলের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণ চালু রাখতে বিতর্কিত সংশোধনী বিলটি শুক্রবার শেষ বেলায়, প্রায় খালি লোকসভায় পাশ করিয়ে নিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে অনেকে আধার প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছেন— সরকার নিজেই আজ তা সসদে সংসদে স্বীকার করেছে। কিন্তু আধার প্রকল্প ছেড়ে আসার কোনও পথই আজ পাশ হওয়া সংশোধনী বিলে রাখা হয়নি। মূল আধার আইনেও তা ছিল না।

Advertisement

আধার সংশোধনী বিলটি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে গোড়া থেকেই। এটি লোকসভায় পেশ করার সময়েই তৃণমূলের সৌগত রায়, কংগ্রেসের শশী তারুরেরা আপত্তি জানিয়েছিলেন এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। তথ্য সুরক্ষার আইন প্রণয়ন না-করে সরকার কেন আধার বিল নিয়ে এগোচ্ছে, ওঠে সেই প্রশ্নও। আজ যে ভাবে বিলটি লোকসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হল, বিতর্ক তৈরি হল তা নিয়েও।

শনি-রবি ছুটি। শুক্রবার দিনভর রাফাল নিয়ে টানটান তরজার পরে সাংসদেরা অনেকেই তখন দিল্লি ছেড়ে যাঁর যাঁর কেন্দ্রে ফিরে যাওয়ার তোড়জোর করছেন। বেরিয়েও যান অনেকে। এমন সময়ে শুরু হয় আধার বিল নিয়ে আলোচনা। সংখ্যার জোরে তা পাশও হয়ে যায়। দিনের শেষে আরও দু’টি বিল এ ভাবে পাশ করিয়েছে সরকার। এর একটি হল ‘কোম্পানি অ্যামেন্ডমেন্ট বিল’ ও অন্যটি ‘নিউ দিল্লি আর্বিট্রেশন সেন্টার বিল’। সাধারণত শুক্রবার বিকেলে সংসদের কোনও কক্ষেই সরকারি বিল নিয়ে আলোচনা হয় না। ওই সময়টা বরাদ্দ থাকে প্রাইভেট মেম্বার বিলের জন্য। এ দিনও তেমনটাই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু রাফাল নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য শেষ না হওয়ায় প্রাইভেট মেম্বার বিল নিয়ে আলোচনা এ দিনের মতো স্থগিত রাখেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। কিন্তু রাফাল তরজা শেষ হতেই শুরু করা হয় আধার বিল নিয়ে আলোচনা। যা নিয়ে তৃণমূলের সাংসদেরা ক্ষোভ জানিয়ে টুইটও করেন। ডেরেক ও’ব্রায়েন লেখেন, ‘‘এই সরকার সংসদ-সহ সব প্রতিষ্ঠানকে হাসির পাত্রে পরিণত করেছে।... শুক্রবার, সন্ধে ৬টা বাজে। আজকের দিনটি প্রাইভেট মেম্বার বিলের জন্য নির্ধারিত। আর এখন লোকসভায় আর একটা বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হল। বিলের বিষয় যা-ই হোক না কেন, সংসদের মতো মহান প্রতিষ্ঠানকে এই ভাবে শেষ করে দেবেন না।’’

Advertisement

বিভিন্ন পরিষেবার সঙ্গে আধার যোগ করা বাধ্যতামূলক নয় বলে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেওয়ার পরেও স্বেচ্ছায় যাতে এই সংযুক্তির রাস্তা খোলা থাকে, আপাত ভাবে সেই লক্ষ্যে বিলটি এনেছে সরকার। ইতিমধ্যেই যাঁরা ওই বিভিন্ন পরিষেবার সঙ্গে আধার যোগ করেছেন তাঁদের একাংশ এ বার নিজেদের বিচ্ছিন্ন করতে বা আধার প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যেতে চান। এর কি কোনও রাস্তা রয়েছে বিলে? এই প্রশ্নের উত্তরে সরকার জানিয়েছে, শিশুরা সবালক হলে তাদের ক্ষেত্রে কিছু পথ রাখার কথা ভাবে হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। তবে বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য এমন কোনও ঢালাও ব্যবস্থা রাখা নেই বিলে। সুপ্রিম কোর্ট এমন কোনও নির্দেশও দেয়নি। আধার কর্তৃপক্ষের ভাঁড়ারে রাখা ব্যক্তিপরিসরের তথ্য মোছার বিষয়টিও একান্তই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেদন নির্ভর বলে সরকার জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন