পাকিস্তানের পাঞ্জা সাহিব গুরুদ্বার। ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তপ্ত সম্পর্কের মধ্যেই পঞ্জাবের শিখ পুণ্যার্থীদের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ করল নয়াদিল্লি। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, পঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত করিডর তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে। এই করিডরটির তৈরি হলে শিখ পুণ্যার্থীদের পক্ষে লাহৌরে অবস্থিত গুরুদ্বার দরবার সাহিব কর্তারপুরে পৌঁছনো সুবিধাজনক হয়ে যাবে। জীবনের শেষ ১৮ বছর এই কর্তারপুরেই কাটিয়েছিলেন গুরু নানক।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই উদ্যোগে এগিয়ে এসেছে পাকিস্তানের ইমরান খান সরকারও। ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি মাসের শেষে তারাও পাকিস্তানের দিকের করিডর-প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবে। ৩৮০০ জন ভারতীয় শিখ পুণ্যার্থীকে সম্প্রতি ভিসা দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের সিদ্ধান্ত, গুরু নানকের জন্ম উৎসব উপলক্ষে এই পূণ্যার্থীরা সে দেশে থাকতে থাকতেই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের দিনটি ঘোষণা করা হবে।
এই কর্তারপুর করিডর প্রকল্পটি ১৯৯৯ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর লাহৌর বাসযাত্রার সময়ে ঘোষিত হয়। দু’দেশের শিখদের দীর্ঘদিনের দাবি এ’টি। আজ বিষয়টি বাস্তবায়িত হওয়ার পর জেটলি জানিয়েছেন, কর্তারপুরের এই করিডর দিয়ে যেতে আলাদা কোনও ভিসা প্রয়োজন হবে না। পাকিস্তানের সাধারণ ভিসাতেই যাওয়া যাবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কথায়, ‘‘এই করিডরের মাধ্যমে শিখ পুণ্যার্থীরা বছরভর গুরুদ্বার দরবার সাহিবে যেতে পারবেন। পাকিস্তান সরকারকে তাদের দিকের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করতে অনুরোধ করা হয়েছে।’’
তবে এই সম্প্রীতির আড়ালে আশঙ্কার মেঘও দেখছেন অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, ফের খালিস্তান আন্দোলন যখন জোরদার হয়ে উঠছে, তখন এই করিডরটি তৈরি করে ভারত নিজেই ফাঁদে পড়ল কি না— সেটাও ভেবে দেখা প্রয়োজন। পাকিস্তানের এত উৎসাহী হয়ে বিপুল সংখ্যক ভিসা দেওয়ার বিষয়টিও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। মাদকে জেরবার পঞ্জাবে এই সমস্যা বাড়বে কি না, সেই প্রশ্নটিও উঠে আসছে।