কিছুদিন পরপর ভূমিকম্প হচ্ছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। ছোটখাটো কম্পন বলে ক্ষয়ক্ষতি কম। কিন্তু উদ্বেগ, কবে না বড় ঝটকা দেয়! উৎকণ্ঠায় ইঞ্জিনিয়াররাও। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনও সতর্কতামূলক নানা কর্মসূচি নিচ্ছে।
সম্প্রতি শেষ হয়েছে ইঞ্জিনিয়ারদের ভূমিকম্প বিষয়ক প্রশিক্ষণ শিবির। রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা শাখার তত্ত্বাবধানে পাঁচ দিনের এই শিবির বসেছিল শিলচর এনআইটি চত্বরে। কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি ও ডিমা হাসাও—এই চার জেলার ৪০ জন ইঞ্জিনিয়ার অংশ নেন। এনআইটির অধ্যাপক অসীম কান্তি দে, টি রহমান ও পল্লব দাস ভূমিকম্প প্রতিরোধী বাড়ি তৈরি, পুরনো বাড়ির রেট্রোফিটিং পদ্ধতি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেন। উপস্থিত ছিলেন কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজীব রায় ও জেলা দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের প্রোজেক্ট অফিসার শামিম আহমদ।
গত সপ্তাহে ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স, ইন্ডিয়া-র শিলচর চ্যাপ্টারের সেমিনারেও রেট্রোফিটিং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়। অধ্যাপক অসীমকান্তি দে বলেন, ভূমিকম্পে পুরনো দালানবাড়িগুলিরই বেশি ঝুঁকি। শিলচরে সরকারি-বেসরকারি মালিকানায় এই ধরনের বেশ কিছু বাড়ি রয়েছে। ভূমিকম্পের তীব্রতা ৭ রিক্টরের বেশি হলে প্রচুর ক্ষতি হবে। রেট্রোফিটিংয়ের সাহায্যে এই আশঙ্কা থেকে রেহাই মিলতে পারে।
রেট্রোফিটিং কী, এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি জানান, পুরনো দালানবাড়ি বা দুর্বল পরিকাঠামো সঠিক নিরীক্ষণ করে উপযুক্ত প্রযুক্তির প্রয়োগে তাকে শক্তিশালী করে তোলা। নতুন বাড়ি তৈরিতে অসীমবাবু প্রথমে মাটি পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এক এক ধরনের মাটিতে এক এক রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এরপর প্রয়োজন উপযুক্ত ডিজাইনিং। অনেকে মোটা পিলার বসিয়েই নিরাপদ মনে করেন। এটা যে মোটেও ঠিক নয়, যুক্তি সহ তুলে ধরেন তিনি। আলোচনায় অংশ নেন ত্রিপুরার দুই ইঞ্জিনিয়ার সুপ্রতীম ভৌমিক ও অসিত পাল। সেমিনারে এনআইটি-র ডিরেক্টর রজত গুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজীব রায়, ইনস্টিটিউটের ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের সভাপতি আর কে মজুমদার এবং সম্পাদক চিন্ময় দেবনাথও বক্তব্য রাখেন। পৌরোহিত্য করেন শিলচর চ্যাপ্টারের সভাপতি দেবপ্রসাদ রায়। প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন সুভাষ চৌধুরী, হরিদাস দত্ত, বিক্রমজিৎ দাশগুপ্ত, রাজেন ভট্টাচার্য প্রমুখ।