সেই নবজাতক। - নিজস্ব চিত্র
জন্মের পর থেকেই একটা হাত ভাল ভাবে নড়াচড়া করতে পারছিল না শিশুটি। কাঁদছিল মাঝেমধ্যেই। প্রসবের সময় হাজির থাকা চিকিৎসককে বিষয়টি জানালেও, কোনও ‘পরামর্শ’ মেলেনি। অন্য চিকিৎসকের নির্দেশে শিশুটির হাতের এক্স-রে করিয়ে হতবাক পরিজনরা। দেখা যায়, তার ডান হাত ভাঙা। সন্দেহ হওয়ায় পায়েরও এক্স-রে করানো হয়। তাতেও মেলে এক রিপোর্ট।
এর পরই প্রসব করানো সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির দায়ে মামলা রুজু করলেন করিমগঞ্জের বনমালি রোডের জয়ী দাসের আত্মীয়রা। তাঁদের নালিশ, প্রসবের সময় সম্ভবত টানাটানি করতে গিয়ে হাত-পা ভেঙেছে শিশুটির। না হলে অপারেশন থিয়েটারে কারও হাত থেকে নীচেও পড়ে যেতে পারে সে। এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। অভিযোগ মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, সম্প্রতি ‘সিজার’ করে শিশুটির জন্ম দেন জয়ীদেবী। অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসক শান্তনু দাস। নবজাতক একটি হাত ভাল ভাবে নাড়াতে পারছিল না। জয়ীর পরিজনরা শান্তনুবাবুকে সে কথা জানান। অভিযোগ, চিকিৎসক তাঁদের কথায় আমল দেননি। অন্য উপায় না পেয়ে জয়ীদেবীরা হাসপাতালের অন্য এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি শিশুটির হাতের এক্স-রে করানোর পরামর্শ দেন। রিপোর্টে দেখা যায়, শিশুটির হাতের হাড় ভাঙা। পরে পরীক্ষায় জানা যায়, শিশুটির পা-ও ভাঙা। জয়ীদেবীর আশঙ্কা, অস্ত্রোপচারের পর অপারেশন থিয়েটারে সম্ভবত শিশুটি পড়ে গিয়েছিল। তখনই তার হাত-পা ভেঙে যায়।
জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক ধ্রুবজ্যোতি দেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তিনি শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিলচর মেডিকেল কলেজে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। তদন্তেরও আশ্বাস দেন। হাসপাতাল সুপার অরুণাভ চৌধুরী এ নিয়ে বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করা হবে। তবে কোনও অসুস্থতার জন্যও নবজাতকের হাত-পায়ের হাড়ে চিড় ধরতে পারে।’’