NewsClick

‘অসত্য অভিযোগ পুলিশের’, নিউজ়ক্লিকের ধৃত দুই কর্তার বিরুদ্ধে করা এফআইআর খারিজের আর্জি আদালতে

ভারতের মানচিত্র থেকে কাশ্মীরকে বাদ দেওয়া এবং অরুণাচল প্রদেশকে বিতর্কিত অঞ্চল হিসেবে দেখানো নিয়ে একটি ইমেল চালাচালিতে প্রবীর যুক্ত ছিলেন বলে দাবি দিল্লি পুলিশের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩০
Share:

ধৃত প্রবীর পুরকায়স্থ। — ফাইল চিত্র।

‘চিনপন্থী প্রচার’ চালানোর অভিযোগে ধৃত নিউজ়ক্লিক পোর্টালের প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার কর্মিবর্গ বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তী শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন। দিল্লি পুলিশ অসত্য অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে বলে অভিযোগ তুলে তা খারিজ করার জন্য হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

ভারতের মানচিত্র থেকে কাশ্মীরকে বাদ দেওয়া এবং অরুণাচল প্রদেশকে বিতর্কিত অঞ্চল হিসেবে দেখানো নিয়ে একটি ইমেল চালাচালিতে প্রবীর যুক্ত ছিলেন বলে দাবি দিল্লি পুলিশের। দিল্লির অতিরিক্ত দায়রা বিচারক হরদীপ কউর বৃহস্পতিবার এই মামলায় ধৃত প্রবীর এবং অমিতকে পুলিশি আপত্তি সত্ত্বেও এফআইআরের প্রতিলিপি দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। শুক্রবার দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মা এবং বিচারপতি সঞ্জীব নারুলার বেঞ্চে ধৃত দুই সাংবাদিকের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিব্বল।

প্রবীর এবং অমিতকে গত মঙ্গলবার গ্রেফতারের পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন’ (‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ বা ইউএপিএ)-এ মামলা করে দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ তোলা হয়, চিনপন্থী প্রচার চালানোয় যুক্ত ওই পোর্টালটি। ধৃতদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে জমা দেওয়া আবেদনে পুলিশ দাবি করে, আমেরিকান ধনকুবের এবং তাঁর শাংহাইয়ের সংস্থার কয়েক জন কর্মীর সঙ্গে এই সংক্রান্ত ইমেল চালাচালি করেছিলেন প্রবীর। ধৃত দু’জনেরই ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়েছে। ওই সংস্থার সাংবাদিক অভিসার শর্মাকেও দিল্লি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের আরও অভিযোগ, বিদেশ থেকে আসা টাকার জোরে কৃষক বিক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে ভারতে অত্যাবশ্যক পণ্যের সরবরাহ ব্যাহত করার চক্রান্তে জড়িত ছিলেন ধৃতেরা। এমনকি, একটি সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ২০১৯-এর নির্বাচনে কারচুপির ষড়যন্ত্রেও প্রবীরের জড়িত থাকার কথা জানা গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

বৃহস্পতিবার বিচারক কউরের এজলাসে ওই মামলার শুনানিতে প্রবীরের আইনজীবী বলেন, এফআইআরের কপি পাওয়াটা অভিযুক্তের অধিকার, যা না দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। গ্রেফতারির কারণ লিখিত আকারে জানানো হলে সেটি সংবিধানিক রক্ষাকবচের কাজ করে। বিশেষ সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব এই আর্জির বিরোধিতা করে বলেন, অভিযুক্তকে এ ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হতে হবে এবং তিনি একটি কমিটি গঠন করবেন। এ ক্ষেত্রে সরাসরি কোর্টে না এসে ধাপে ধাপে এগোনো উচিত।

গ্রেফতারির কারণ ইতিমধ্যেই ধৃতদের জানানো হয়েছে বলে জানিয়ে বিশেষ সরকারি আইনজীবীর দাবি করেন, বিদেশি অনুদানের নামে ১১৫ কোটি টাকা পেয়েছিলেন অভিযুক্তেরা। যদিও বিচারক কউর তাঁর নির্দেশ বহাল রেখে জানান, ধৃতদের এফআইআরের কপি দিতে হবে দিল্লি পুলিশকে। প্রসঙ্গত, আর্থিক তছরুপ এবং চিনকে সমর্থন করে এমন কিছু লেখা প্রকাশ করার অভিযোগে ‘নিউজ়ক্লিক’-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল ইডি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে এই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত বহু সাংবাদিক এবং কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় দিল্লি পুলিশ। সংস্থার এক কর্মীর খোঁজে হানা দেওয়া হয় সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বাড়িতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন