আধার বিরোধিতায় ছক দেখছেন নন্দন

মামলাকারীদের একাংশের বক্তব্য— ভার্চুয়াল আইডি একটি ‘অকাজের’ এবং ‘অপরীক্ষিত’ পদক্ষেপ। আগামী সপ্তাহে আধার মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে এই নতুন দুই ব্যবস্থারও বিরোধিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

আধারকে বদনাম করতে ‘পরিকল্পিত প্রচার’ চালানো হচ্ছে বলে মনে করেন নন্দন নিলেকানি। জনতার ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় গত কাল আধার নম্বরের বদলে ‘ভার্চুয়াল আইডি’ এবং ‘ই-কেওয়াইসি’ চালুর কথা ঘোষণা করেছেন আধার কর্তৃপক্ষ। তারও প্রশংসা করেছেন আধার প্রকল্পের অন্যতম প্রধান রূপকার নিলেকানি।

Advertisement

ইউপিএ জমানার অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম যদিও আজ বলেছেন, ‘‘এখন এই পদক্ষেপ অর্থহীন। দেশবাসীর একটা বড় অংশ ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক, মোবাইল বা সরকারি সুবিধে পেতে আধার নম্বর সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে জমা দিয়ে ফেলেছেন।’’ আধারের বৈধতা নিয়ে মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারীদের একাংশের বক্তব্য— ভার্চুয়াল আইডি একটি ‘অকাজের’ এবং ‘অপরীক্ষিত’ পদক্ষেপ। আগামী সপ্তাহে আধার মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে এই নতুন দুই ব্যবস্থারও বিরোধিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, যে ভাবে আধারের তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে তা আদৌ সুরক্ষিত নয়। সম্প্রতি ‘দ্য ট্রিবিউন’ সংবাদপত্রের সাংবাদিক পাঁচশো টাকা দিয়ে আধার ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড পেয়ে গিয়েছেন বলে দাবি ওঠার পরে সেই অভিযোগ আরও তীব্র হয়। যদিও সেই অভিযোগ মানতে রাজি নন নিলেকানি। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে আধারের সমস্ত তথ্য ফাঁস করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আধারের তথ্য অনেকগুলি স্তরে রাখা থাকে। আসলে, কী ভাবে আধার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করা যায়, তার জন্য ১০০% পরিকল্পনা মাফিক প্রচার চালানো হচ্ছে।’’ তাঁর এই যুক্তি মানতে নারাজ মামলাকারীরা। সংবাদমাধ্যমকে তারা জানান, ভার্চুয়াল আইডি-র মাধ্যমে নিজেদের প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঢাকতে চাইছেন আধার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

ট্রিবিউনের ওই প্রতিবেদনের পরে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই)-এর মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে একাধিক শিবিরে। ইউআইডিএআই-র পদক্ষেপ ঠিক না বেঠিক— সেই বিতর্কে না গিয়ে নিলেকানি বলেন, ‘‘সামনের দিকে তাকাতে হবে। এটা বুঝতে হবে যে, আধার ব্যবস্থা থাকবে। কারণ, দেশের ১১৯ কোটি মানুষের আধার হয়েছে, ৫৫ কোটি মানুষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে আধার যুক্ত করেছেন, ৯৫ হাজার কোটি টাকার সরকারি অনুদান সরাসরি জনতার কাছে পৌঁছেছে।’’

এখানেই চিদম্বরমের বক্তব্য, ‘‘আস্তাবল থেকে ঘোড়া বেরিয়ে যাওয়ার পরে তালা লাগিয়ে যেমন লাভ নেই, তেমনই সব তথ্য দিয়ে দেওয়ার পরে এই দ্বিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করে লাভটা কী হবে?’’ কিন্তু নিলেকানি বলছেন, তিনি নিশ্চিত— সুপ্রিম কোর্ট আধারকে ‘অসাংবিধানিক’ বলবে না। নেতিবাচক ভাবনার বদলে বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখারই পক্ষপাতী তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন