National News

নিপা ভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে ১০, তীব্র হচ্ছে আতঙ্ক

কেরলের সরকারি সূত্রের খবর, আপাতত দু’টি জেলা কোঝিকোড় ও মালাপ্পুরমে ওই ভাইরাসের হানাদারির প্রমাণ মিললেও দ্রুত তা রাজ্যের একটি বড় অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু কোঝিকোড়েই মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ১৭:০৪
Share:

কেরলে উত্তরোত্তর ভয়াবহ হয়ে উঠছে নিপা ভাইরাসের হানাদারি। মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০ ছাড়িয়েছে। কোঝিকোড়ের হাসপাতালে আক্রান্তদের দেখাশোনা করছিলেন যিনি, সেই নার্সেরও মৃত্যু হয়েছে। ৩১ বছর বয়সী ওই নার্সের নাম লিনি পুথুসারি। হাসপাতালে ভর্তি ৯ জনের মধ্যে ২ জনের অবস্থা রীতিমতো আশঙ্কাজনক।

Advertisement

ওই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গগুলির অন্যতম- অল্প জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, অস্বাভাবিক ভাবে মাথা ঘেমে ওঠা, অবসাদ, ঘুম ঘুম ভাব। আক্রান্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কোমায় চলে যাচ্ছেন রোগী। ঢলে পড়ছেন মৃত্যুর কোলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত ফ্রুট ব্যাটস বা ফলখেকো বাদুড়দের থেকেই এই নিপা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। তবে শুয়োর থেকেও ছড়ায় এই ভাইরাস। ওই ভাইরাসে আক্রান্ত বাদুড়ের ছোঁয়া/কামড়ানো ফল যদি কেউ খান/ছোঁন, তা হলেই তিনি আক্রান্ত হবেন নিপা ভাইরাসে।

কেরলের সরকারি সূত্রের খবর, আপাতত দু’টি জেলা কোঝিকোড় ও মালাপ্পুরমে ওই ভাইরাসের হানাদারির প্রমাণ মিললেও দ্রুত তা রাজ্যের একটি বড় অংশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুধু কোঝিকোড়েই মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। কোঝিকোড় ও মালাপ্পুরমে অন্তত ৯৪ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে বাড়িতে।

Advertisement

গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৮ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের ১২ জন আক্রান্ত হয়েছেন নিপা ভাইরাসে। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কোঝিকোড়ের পেরাম্বারায় একটি বাড়ি থেকেই এই রোগ ছড়িয়েছে বলে কেরলের স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান। ওই বাড়ির দুই ভাই ও তাঁদের এক আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে নিপা ভাইরাসের হানাদারিতে।

আরও পড়ুন- ভয়াবহ নিপা ভাইরাসের হানা কেরলে, মৃত ৬​

আরও পড়ুন- বাচ্চার জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে নজর রাখুন​

কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা জানিয়েছেন, কোঝিকোড়ের পেরাম্বারায় যে পরিবারের দুই ভাই ও তাঁদের এক মহিলা আত্মীয়ের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বাড়ির কুয়োতেই একটি মৃত বাদুড়ের হদিশ মিলেছে। অনুমান, ওই বাদুড়টি থেকেই নিপা ভাইরাস বাতাসে ভেসে দ্রুত কোঝিকোড় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। ওই কুয়োটি বুঁজিয়ে দেওয়া হয়েছে। মালাপ্পুরমে যে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কোঝিকোড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের অফিস থেকে এ দিন টুইট করে জানানো হয়েছে, ওই রোগের আপৎকালীন চিকিৎসার জন্য বহু চিকিৎসক স্বেচ্ছায় কাজ করতে রাজি হয়েছেন। এ ব্যাপারে কেরলের চিকিৎসকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কাফিল খান। নিপায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইচ্ছুক রাজ্যের চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তার সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে অ্যালার্ট। দিন-রাতের চিকিৎসার জন্য উপদ্রুত এলাকাগুলিতে বিশেষ কন্ট্রোল রুম খুলেছে কেরল সরকার।

এই ভাইরাসের প্রথম হদিশ মেলে ১৯৯৮-’৯৯ সালে। ওই সময় মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে নিপা ভাইরাসের হানাদারিতে মৃত্যু হয় ১০০ জনের। এর হানায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় মালয়েশিয়ার সুঙ্গাই নিপা গ্রামে। তাই ওই গ্রামের নামেই এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশে এই ভাইরাসের হানায় আক্রান্তদের ৮৯ শতাংশেরও বেশি মারা যান।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন