মদ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত আইন নিয়ে এ বার আমজনতার মতামত নিতে চলেছে বিহারের নীতীশ সরকার। গত ৫ এপ্রিল থেকে রাজ্যে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর এই প্রথম সাধারণের মতামত শুনতে চাইছে সরকার।
আইনের প্রয়োগ নিয়ে কখনওই রাজ্য সরকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত নেননি। তার জেরে একটি শ্রেণির মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। মৌলিক অধিকারে সরকার হস্তক্ষেপ করছে বলেই মনে করেন এই শ্রেণিটি। সম্প্রতি পটনা হাইকোর্টও নিষেধাজ্ঞা খারিজ করতে গিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তকে ব্যক্তি-স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলে বর্ণনা করে। একে সংবিধান-বিরোধীও বলে পটনা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায় আসার কয়েকদিনের মধ্যে সরকার পূর্ব পরিকল্পনা মতোই নতুন আবগারি আইন লাগু করে। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বিহার সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। উচ্চতম আদালত হাইকোর্টের রায়ের উপরে আপাতত স্থগিতাদেশ জারি করেছে। সুপ্রিম কোর্টে বিহার সরকার দু’টি বিষয়ে জানতে চেয়েছে। (১) মদ খাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার কিনা। (২) কোনও রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা আছে কিনা।
উচ্চতম আদালতে শুনানি এখনও শুরু হয়নি। তার আগেই, আজ রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণের মতামত চেয়েছে সরকার। আগামী ১২ নভেম্বর পর্যন্ত চিঠি, ফ্যাক্স এবং ই-মেলের মাধ্যমে সরকারকে নিজের নিজের মতামত, পরামর্শ দেওয়া যাবে বলে ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
রাজ্যের আইনজ্ঞদের একটি অংশ মনে করছেন, নতুন আইনটিরও পুরনোর মতো দশা হবে। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখবে বলে বিহার সরকারের আশঙ্কা। সে কারণেই জনমত সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা-পন্থী আইনজীবীরা মনে করেন, সাধারণ মানুষই, বিশেষ করে মহিলারা মদের বিরুদ্ধেই মত দেবেন। এবং সেটাই নীতীশ কুমারের হাতিয়ার হবে। একই সঙ্গে তাঁদের ধারণা, সুপ্রিম কোর্টও এ ব্যাপারের সরকারি সিদ্ধান্তকেই স্বীকৃতি দেবে।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ সকালেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, মুখ্যসচিব অঞ্জনীকুমার সিংহ এবং অ্যাডভোকেট জেনারেল ললিত কিশোর দিল্লি গিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের হয়ে লড়ার কথা গোপাল সুব্রহ্মনিয়ণ বা রাজীব ধবনের। এই ব্যাপারে সেখানে আলোচনা হবে। সাধারণ মানুষের মতামত যে জানতে চাওয়া হয়েছে, তাও সুপ্রিম কোর্টকে সরকার জানাবে।