রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনও রকম আগাম অঙ্গীকার এড়াতেই কি সনিয়ার ডাকা বৈঠক নীতীশ পরিহার করলেন—এই প্রশ্নে জল্পনা এখন তুঙ্গে। জল্পনা আরও বেড়েছে, কারণ আজ দিল্লিকে এড়িয়ে গেলেও আগামী কালই নীতীশ দিল্লি যাচ্ছেন। এবং দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভোজসভায় যোগ দিতে। সফররত মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ জগন্নাথের সম্মানে মোদী এই ভোজসভার আয়োজন করেছেন।
সনিয়ার বৈঠক এড়িয়ে নীতীশের এই দিল্লি সফরকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। উঠেছে প্রশ্নও। আজই দিল্লিতে ১৭টি বিরোধী দলকে নিয়ে বৈঠক করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। সেই বৈঠকে নীতীশ নিজে না গিয়ে পাঠিয়েছেন দলের প্রাক্তন সভাপতি শরদ যাদবকে। সরকারি ভাবে পটনাতে আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছাড়া কোনও কার্যসূচিই তাঁর ছিল না। তবুও সনিয়ার বৈঠকে হাজির না থেকে কেন মোদীর ভোজসভায় হাজির হচ্ছেন তিনি, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে।
বিহার বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে মোদী সরকারকে সমর্থন করে চলেছেন নীতীশ। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক থেকে নোট বাতিল, সবেতেই ‘দায়িত্বশীল’ বিরোধী হিসেবে তাঁকে পাশে পেয়েছে কেন্দ্র। ফলে জল্পনা চলছেই।
জেডিইউ সূত্রের খবর, ২০১২ সালে এনডিএতে থেকেও ইউপিএ প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করেছিলেন নীতীশ। এনডিএ-র পূর্ণ সাংমাকে নয়। এ বার প্রণববাবু প্রার্থী হলে নীতীশ যে তাঁর সঙ্গেই থাকবেন তা তিনি সনিয়া গাঁধীকে জানিয়ে এসেছেন। তবে অন্য কোনও প্রার্থী হলে নিজস্ব ‘পছন্দ’-কেই তিনি গুরুত্ব দেবেন। অর্থাৎ পছন্দ হলে এনডিএ প্রার্থীকেও সমর্থনের পথ খোলা রাখছেন। এক সূত্রের বক্তব্য, তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া যায়, এনডিএ লালকৃষ্ণ আডবাণীকে প্রার্থী করল, তখন নীতীশ তাঁকে সমর্থন যে দেবেনই এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই। শেষ পর্যন্ত নীতীশ জল মাপবেন। তাই সনিয়ার আজকের বৈঠকে হাজির থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে চাননি তিনি।
তবে প্রধানমন্ত্রীর ভোজসভায় যোগ দেওয়া নিয়ে জেডিইউ নেতাদের ব্যাখ্যা, মরিশাসের বেশির ভাগ বাসিন্দাই ভারতীয় বংশোদ্ভূত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রবীণ জগন্নাথের শিকড়ও বিহারে। তাঁর বাবা, মরিশাসের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী অনিরুদ্ধ জগন্নাথের সঙ্গেও নীতীশের সুসম্পর্ক। দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নীতীশের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সে কারণেই আগামী কাল তিনি দিল্লি যাচ্ছেন।