Himachal Pradesh Crisis

লোকসভা ভোট পর্যন্ত সুখু হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন, প্রিয়ঙ্কার বার্তা বিক্ষুব্ধ বিক্রমাদিত্যকে

রবিবার রাতে দিল্লিতে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সঙ্গে বৈঠকে হিমাচলের বিক্ষুব্ধ মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংহকে এ কথা জানানো হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, রবিবার রাতে দেড় ঘণ্টা ধরে ওই বৈঠক হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২৪ ২৩:২৭
Share:

(বাঁ দিক থেকে) সুখবিন্দর সিংহ সুখু, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার এবং‌ বিক্রমাদিত্য সিংহ। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোট পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সুখবিন্দর সিংহ সুখুকে সরানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। রবিবার রাতে দিল্লিতে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার সঙ্গে বৈঠকে হিমাচলের বিক্ষুব্ধ মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিংহকে এ কথা জানানো হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডে-তে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, রবিবার রাতে দেড় ঘণ্টা ধরে ওই বৈঠক হয়। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপালও সেখানে হাজির ছিলেন।

Advertisement

বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পঞ্চকুলায় গিয়ে বিদ্রোহী ছ’জন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে দেখা করে শুক্রবার রাতে বিক্রমাদিত্য দিল্লি রওনা দিয়েছিলেন। তার আগে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওঁদের অনেকে ভুল বুঝতে পেরে কংগ্রেসে ফিরে আসতে চান। আমি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।’’

দলীয় হুইপ অমান্য করে হিমাচল বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সরকারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের পক্ষে ভোট না-দেওয়ার কারণে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ হিমাচল বিধানসভা স্পিকার কুলদীপ সিংহ পঠানিয়া ওই বিদ্রোহী ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজ করেছিলেন।

Advertisement

তার আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা ভোটের সময় ওই ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক বিজেপির প্রার্থী হর্ষ মহাজনের সমর্থনে ‘ক্রস ভোটিং’ করেছিলেন। ফলে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি হেরে যান। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। ঘটনাচক্রে, ওই বিধায়কদের অধিকাংশই বিক্রমাদিত্য এবং তাঁর মা তথা হিমাচল কংগ্রেসের সভানেত্রী প্রতিভা সিংহের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত।

ঘটনাচক্রে, ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যসভা ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রতিভা সরাসরি কংগ্রেস বিধায়ক দলে ভাঙনের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের কার্যকলাপে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ অন্য দিকে, বিক্রমাদিত্য গত বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখুর সমালোচনা করে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। বুধের রাতে সেই ইস্তফা ফেরানোর কথা জানালেও বৃহস্পতির (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালেই আবার ‘বেসুরো’ হয়ে তিনি বলেন, ‘‘এখনও ইস্তফা ফেরাইনি।’’

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতে এআইসিসির তিন পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রতিভা ও বিক্রমাদিত্য জানিয়েছিলেন সমস্যা মিটে গিয়েছে। কিন্তু শুক্রবার দুপুরে কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়িয়ে প্রতিভা বলেন, ‘‘আমাদের দলের চেয়ে বিজেপির কাজের পদ্ধতি ভাল!’’ সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি আরও অনেক কিছু করবে। আমাদের অবস্থান দুর্বল।’’

৬৮ আসনের হিমাচল বিধানসভায় কংগ্রেসের আসনসংখ্যা ৪০। এ ছাড়া তিন জন নির্দল বিধায়ক সুখু সরকারকে সমর্থন করছিলেন। কিন্তু ছ’জন বিদ্রোহীর মতোই তাঁরাও রাজ্যসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। অন্য দিকে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা হিমাচল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ‘জাদুসংখ্যা’ ৩৫। ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজের ফলে এখন রয়েছেন ৬২ জন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অঙ্ক নামল ৩৩-এ। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের রইলেন ৩৪ বিধায়ক। বিজেপির ২৫। অর্থাৎ তিন নির্দলকে পাশে পেলেও কংগ্রেসকে ছুঁতে পারবে না তারা। কিন্তু বিক্রমাদিত্য-প্রতিভা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করলে পরিস্থিতি ‘বদলে’ যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষদের অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন