অভিযুক্ত মহিলা পুনম। ছবি: সংগৃহীত।
রূপকথা ‘স্নো হোয়াইট অ্যান্ড দ্য সেভেন ডোয়ার্ফস’-এর কথা মনে পড়ে যেতে পারে। পরিবারের কোনও সন্তান তাঁর চেয়ে দেখতে সুন্দর হতে পারে না। আর এই ধারণা এবং বিশ্বাসের বশে পরিবারের একের পর এক শিশুকে খুন করে গিয়েছেন হরিয়ানার এক মহিলা। এমনকি নিজের তিন বছরের সন্তানকেও রেহাই দেননি। তাকেও খুনের অভিযোগ উঠেছে ওই মহিলার বিরুদ্ধে। খুনের কারণ জানার পর তদন্তকারী আধিকারিকেরাও হতবাক হয়ে গিয়েছেন। অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম পুনম।
পুলিশ সূত্রে খবর, চার শিশুকে এমন ভাবে খুন করেছেন, যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। পরিবারের কোনও শিশু তাঁর চেয়ে সুন্দর হলেই তা সহ্য করতে পারতেন না পুনম। কিন্তু কাউকে বিষয়টি কখনও বুঝতে দেননি। ২০২৩ সাল থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নিজের সন্তান-সহ পরিবারের চার শিশুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে পুনমের বিরুদ্ধে। সবক’টি খুনের ক্ষেত্রে কারণ একটাই— ‘ওরা আমার চেয়ে সুন্দর, অতএব ওদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই’! আর এই ধারণা এবং ঈর্ষার বশবর্তী হয়ে প্রথমে তিন ভাইঝিকে খুন করেন। তার পর নিজের সন্তানকেও খুন করতে হাত কাঁপেনি পুনমের।
কী ভাবে খুন করেছিলেন পুনম? কী ভাবেই বা তাঁর এই কাণ্ড প্রকাশ্যে এল?
পানিপতের পুলিশ সুপার ভূপেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, চারটি খুনের কথাই স্বীকার করেছেন পুনম। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পুনম। কিন্তু তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। সূত্রের খবর, প্রতিটি খুনের পর একাকী সেই হত্যার উদ্যাপন করতেন। এমনকি অত্যন্ত শান্ত এবং ধীরস্থির আচরণ লক্ষ্য করা যেত সেই সময়। পরিবারের শিশুদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটাতেন পুনম। ২০২৩ সালে প্রথম খুন করেন পুনম। সোনিপতে তাঁর ন’বছরের ভাইঝি ইশিকাকে জলে ডুবিয়ে হত্যা করেন বলে অভিযোগ। ওই বছরেই নিজের সন্তান শুভমকে ঠিক একই কায়দায় খুন করেন এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু বলে চালিয়ে দেন। ২০২৫ সালের অগস্টে আরও এক ভাইঝিকে জলে ডুবিয়ে খুন করেন। সেই খুন ধামাচাপা দিতে ১ ডিসেম্বর বিধি নামে ছ’বছরের ভাইঝিকে বাড়িতে রাখা বাথটাবের জলে ডুবিয়ে হত্যা করেন। বিধির মৃত্যুতে তাঁর বাবা-মায়ের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেন। আর সেই তদন্তে নেমে পরিবারের আরও তিন শিশুর খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।