প্রকাশ জাভড়েকর
পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ যাচ্ছেন না রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ রাজ্যসভায় এই প্রসঙ্গে বিতর্কের জবাবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন, তাঁর মন্ত্রক এমন কোনও পদক্ষেপ করবে না, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়।
জাতীয়তাবাদী মনোভাবের সঙ্গে রবীন্দ্রচেতনা খাপ খায় না, এমন অভিযোগ তুলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কিত অংশ দশম শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়ার দাবি তুলে এনসিইআরটি-কে চিঠি দিয়েছিলেন সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস-এর প্রধান দীননাথ বাত্রা। বিতর্কের মুখে ন্যাসের তরফে জাতীয় সম্পাদক অতুল কোঠারি জানান, ইতিহাস বা অন্য বিষয় পরিবর্তনের দাবি জানালেও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্যই করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমে ন্যাসের নাম জড়িয়ে যা বলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। গতকাল এই বিষয়টি সামনে আসার পরে সঙ্ঘ তথা ন্যাসের সমালোচনা শুরু হয়। জল গড়ায় প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যে বিষয়টিতে ক্ষুব্ধ, তা ন্যাসকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, তার পরেই আজ বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ন্যাস।
আরও পড়ুন:মোর্চার সঙ্গে বসতে মমতাকে পরামর্শ রাজনাথের
আজ রাজ্যসভায় প্রসঙ্গটি তোলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। এই সুপারিশ এসেছে না আসেনি— সে বিতর্কে না ঢুকে জাভড়েকর বলেন, ‘‘আমরা রবীন্দ্রনাথকে সম্মান করি। তাঁর সঙ্গে সেই সব ব্যক্তিকেও, যাঁরা লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতা এনেছিলেন। এ ধরনের কোনও কিছুই বাদ যাবে না।’’ কেন এবং কী ভাবে এই পরামর্শ এল, তার ব্যাখ্যায় জাভড়েকর জানান, এনসিইআরটি-র পাঠ্য পুস্তকে যদি কোনও ভুল থাকে তা হলে তা সংশোধনের জন্য শিক্ষক ও বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে পরামর্শ চেয়ে পাঠায় মন্ত্রক। এ রকম ৭০০ পরামর্শ জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখে তবে কিছু বলা সম্ভব।
শেষে তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায় এবং ডেরেক ও ব্রায়েন গীতাঞ্জলি-সহ রবীন্দ্রনাথের ২২টি বই (ইংরেজি সংস্করণ) জাভড়েকরদের হাতে তুলে দেন। দীননাথকেও একটি বই দেওয়ার জন্য ডেরেক পরে জাভড়েকরকে অনুরোধ করেন।
তবে তৃণমূলকে বিঁধে ধূপগুড়িতে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘সিপিএম আমলে নোবেল চুরি হলেও ওরা উদ্ধার করতে পারেনি৷ ছ’বছরে পারেনি তৃণমূল৷ অথচ, বিজেপি রবীন্দ্রনাথের লেখা তুলে দিতে চায়, এমন মিথ্যে বলে সংসদ গরম করছে ওরা৷ আমরা রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা করি৷ তাঁর নামে বাজে রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত৷’’