চোরের নজর আবার নোবেলে। তবে এ বার গেল নকলের উপর দিয়েই।
খবরটা শুনে প্রথমে চমকে উঠেছিল গোটা দেশ। দক্ষিণ দিল্লিতে কৈলাস সত্যার্থীর বাড়ি থেকে চুরি গিয়েছে তাঁর নোবেল পদক। রবীন্দ্রনাথের নোবেলটির মতোই কি তা হলে খোয়া গেল ভারতের আরও একটি নোবেল? তবে খানিকক্ষণের মধ্যে জানা যায়, যেটি চুরি গিয়েছে, সেটি আসল নয়। আসলটি সুরক্ষিত রয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবনে।
২০১৪-য় পাক কিশোরী মালালা ইউসুফজাইয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ‘বচপন বাঁচাও আন্দোলন’-এর প্রতিষ্ঠাতা, সমাজকর্মী কৈলাস। মাসখানেক আগে দেশের উদ্দেশে নোবেল পদকটি উৎসর্গ করে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেন তিনি।
মঙ্গলবার ভোররাতে হানা দেওয়া দুষ্কৃতীরা নেহাতই ডাকাতির উদ্দেশ্য নিয়ে রাজধানীর অভিজাত অলকানন্দা এলাকার এই বাড়িতে ঢুকেছিল, নাকি তাদের নজর নোবেলের উপর ছিল, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না দিল্লির পুলিশ কর্তারা। ২০০৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেলটির সঙ্গে শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবন থেকে চুরি গিয়েছিল ৪৩টি সামগ্রী। সোমবার রাতে সত্যার্থীর বাড়ির জানলা ভেঙে ঢুকে আরও নানা মূল্যবান পুরস্কারও হাতিয়েছে দুষ্কৃতীরা। নিয়ে গিয়েছে নোবেল মানপত্রটিও।
ঘটনাচক্রে এখন নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতেই আমেরিকায় গিয়েছেন কৈলাস। সঙ্গে স্ত্রী। আজ সকাল ন’টা নাগাদ ‘বচপন বাঁচাও আন্দোলন’-এর এক কর্মী নিজের গাড়ি আনতে সত্যার্থীর বাড়ি যান। রাকেশ সেঙ্গর নামে ওই কর্মী দেখেন, বাড়ির সদর দরজা খোলা। ভেতরে ঢুকে দেখেন, শোওয়ার ঘরে জিনিসপত্র ছড়ানো-ছেটানো, লকার ভাঙা। রাকেশ খবর দেন কৈলাসের ছেলে ভুবন ঋভুকে। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, কিছু পারিবারিক গয়নাগাঁটিও চুরি গিয়েছে। ভুবনের কথায়, ‘‘নোবেল পদকটিকে মনে হয় গয়না ভেবেই নিয়ে গিয়েছে চোরেরা।’’ অভিযোগ দায়ের হয়েছে কালকাজি থানায়। তদন্তে সাহায্য করছে দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ঘরের নানা জিনিসে লেগে থাকা হাত-পায়ের ছাপ ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে।
চুরির খবর পেয়ে এক বিবৃতি জারি করেছেন স্বয়ং নোবেলজয়ী। চোরেদের কাছে কৈলাসের আর্জি, ‘‘চুরির সময়ে হয় তো আপনারা জিনিসটার মূল্য বুঝতে পারেননি। এই পুরস্কার আমার নয়। সেটি
দেশের প্রতিটি মানুষ ও শিশুর। সকলের হয়ে আপনাদের ওটি ফেরত দিতে অনুরোধ করছি।