প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
৯টা থেকে ৫টা নয়। মুম্বইয়ের সরকারি অফিসগুলির সময় বদলের ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে। অফিসের ব্যস্ত সময়ে ট্রেনের ভিড় সামাল দিতেই এই ধরনের ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনার জন্য উচ্চপর্যায়ের টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। সরকারি অফিসগুলির পাশাপাশি বেসরকারি অফিসগুলির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে বলে সূত্রের খবর। তারাও যাতে অফিসের সময়ের কিছুটা হেরফের করে, সেই প্রস্তাবও রাখা হতে পারে।
এই পরিকল্পনা যে নেওয়া হচ্ছে সেটি সুনিশ্চিত করেছেন মহারাষ্ট্রের পরিবহণমন্ত্রী প্রতাপ সরনাইক। এই পরিকল্পনা কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যায় তার জন্য যে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে, সেই দলে থাকবেন পরিবহণ দফতর, রেল, বড় বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির প্রতিনিধিরা। সরকারি অফিসগুলি তো বটেই, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে যাতে অফিসের সময়কে দু’দফায় ভেঙে দেওয়া যায়, তার প্রস্তাব দেওয়া হবে। অফিসগুলির প্রস্তাবিত সময় হবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে এবং সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা।
মুম্বইয়ের লাইফলাইন বলা হয় লোকাল ট্রেনকে। প্রতি দিন প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ এই গণপরিবহণে যাতায়াত করেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। ট্রেনে সবচেয়ে বেশি ভিড়ের চাপ থাকে সকাল ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা। কারণ ওই সময়ে নিত্যযাত্রী এবং অফিসযাত্রীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। দিন দিন সেই ভিড়ের পরিমাণ বাড়ছে। বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন, সেন্ট্রাল এবং হারবার শাখায় যাত্রীদের সংখ্যা বিপুল হারে বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। যার জেরে অফিসের ব্যস্ত সময়ে স্টেশনগুলিতে তিল ধারণের জায়গা থাকে না।
প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে এলাকা ধরে ধরে অথবা বাছাই করা কয়েকটি সংস্থার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যদি বিষয়টি সফল হয়, তা হলে শহর জুড়ে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু হবে। প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন, এই বিষয়টি যদি সফল হয়, তা হলে শুধু অফিস যাওয়ার সময়ই বাঁচবে না, বরং গণপরিবহণগুলিতেও যাত্রীদের চাপ কমবে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে অফিসের ব্যস্ত সময়ে ভিড়ের চাপে চলন্ত লোকাল ট্রেন থেকে পড়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল মুম্বইয়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন, ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অনেকে ভিতরে ঢুকতে না-পেরে দরজায় ঝুলছিলেন। ট্রেনের দু’দিকের দরজাতেই অনেকে দাঁড়িয়েছিলেন। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে কিছুটা এগোতেই তাঁরা হাত ফস্কে ছিটকে রেললাইনের ধারে পড়ে যান। বাদুড়ঝোলা ভিড়ে বার বার দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই কি অফিসের সময়ে বদলে আনতে চাইছে রাজ্য সরকার, তা নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।