তেজস্বী যাদব। — ফাইল চিত্র।
অধুনা বিহারের বিরোধী জোট ‘মহাগঠবন্ধন’ ক্ষমতায় এলেই সে রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এমনই প্রতিশ্রুতি দিলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর নেতা তথা লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদব। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০ দিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত আইন পাশ করানো হবে বলে জানিয়েছেন বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী।
বৃহস্পতিবার পটনায় একটি সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী বলেন, “আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে পরিবারগুলিতে কেউ সরকারি চাকরি করেন না, সেই পরিবারগুলির এক জনের সরকারি চাকরি সুনিশ্চিত করব। তার জন্য আমরা ২০ দিনের মধ্যে নতুন আইন তৈরি করব। ২০ মাসের মধ্যে এমন কোনও বাড়ি থাকবে না, যেখানকার কোনও সদস্য সরকারি চাকরি করেন না।”
পরে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে তেজস্বী জানান, নতুন ‘বিশেষ কর্মসংস্থান আইন’-এ ২০ মাসের মধ্যে বিহারের প্রতিটি পরিবারের এক জনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালানোর সময় তাঁর দল ১৭ মাসে ৫ লক্ষ চাকরি দিয়েছিল বলেও জানান তেজস্বী।
ভোটের আগে বিভিন্ন দল হরেক রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। বহু সময়ই দলগুলির বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি আঁচ করে নিজেই সকলকে আশ্বস্ত করেন তেজস্বী। তিনি বলেন, “আমরা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সমীক্ষা করেছি। সমীক্ষার ভিত্তিতে প্রতিটি পরিবারের তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। প্রতিশ্রুতি যখন দিয়েছি, তখন আমি কথা দিচ্ছি যে, আমি যতটা করতে পারব, ততটাই শুধু বলব।” তার পরেই বিজেপি-জেডিইউ সরকারকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “এটা জুমলাবাজি নয়। আমরা কাউকে ঠকাব না। তেজস্বীর প্রমাণ দেখানোর প্রয়োজন নেই।”
বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে একই সঙ্গে বিজেপি এবং জেডিইউকে আক্রমণ শানান তেজস্বী। গত ২০ বছর বিহারে বেকার সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, নির্বাচনী ইস্তাহারে এই প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে যুব সম্প্রদায়ের ভোট নিজেদের ঝুলিতে ভরতে চাইছেন তেজস্বী। ইতিমধ্যেই সমাজের এই অংশের ভোট নিজেদের অনুকূলে আনতে বেকার ভাতার পরিধি বৃদ্ধি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। এত দিন বিহারে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা তরুণ-তরুণীরা প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা পেতেন। নীতীশের ঘোষণার পর ২০-২৫ বছর বয়সি স্নাতক পাশ তরুণ-তরুণীরাও দু’বছরের জন্য প্রতি মাসে ওই টাকা পাবেন।
সোমবার বিহারে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বার দুই দফায় নির্বাচন হবে বিহারে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে নভেম্বরের ৬ তারিখ। প্রথমে ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হবে ১১ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হবে ১২২টি বিধানসভা কেন্দ্রে। গণনা এবং ফলঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর। লড়াই মূলত আরজেডি, কংগ্রেস, বাম দলগুলি ((সিপিআইএমএল লিবারেশন, সিপিএম, সিপিআই) নিয়ে তৈরি হওয়া জোট মহাগঠবন্ধনের সঙ্গে বিজেপি, জেডিইউ-র জোট এনডিএ-র মধ্যে। লড়াইয়ে রয়েছে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকের জন সুরাজ পার্টিও। অধুনা প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের দল এলজেপি-র সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে এখনও আলোচনা চালাচ্ছে বিজেপি।