Taliban and India Relation

ভারতে এলেন আফগান বিদেশমন্ত্রী! তালিবান নেতার বৈঠক হবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভালের সঙ্গেও

আফগানিস্তানের তালিবান সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পায়নি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সঙ্গেই তাদের স্বীকৃত কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এখনও কূটনৈতিক স্বীকৃতি না-দিলেও তালিবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করে দেয়নি ভারত।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:২০
Share:

(বাঁ দিকে) আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ছ’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে এলেন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। প্রায় চার বছর আগে আফগানিস্তানের দখল নেয় তালিবানেরা। তার পর থেকে এই প্রথম বার ভারত সফরে এলেন তালিবান বিদেশমন্ত্রী। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ছ’দিনের এই সফরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে মুত্তাকির। এ ছাড়া ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে মুত্তাকি দিল্লিতে পৌঁছোনোর পর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। আফগান বিদেশমন্ত্রীকে ভারতে স্বাগত জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা মুখিয়ে রয়েছি।’ এই সফরকালে তাজমহল এবং উত্তরপ্রদেশের ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ পরিদর্শনে যাওয়ারও কথা রয়েছে মুত্তাকির।

বস্তুত, গত মাসেই ভারত সফরে আসার কথা ছিল আফগান বিদেশমন্ত্রীর। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ তাঁর বিদেশ ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে। সেই কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। পরে দিল্লি সফরের জন্য ৯-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সাময়িক ভাবে শিথিল করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ওই ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার ছ’দিনের সফরে ভারতে আসেন তিনি। শুধু মুত্তাকিই নন, সকল শীর্ষ তালিবান নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। বিদেশে যাত্রার জন্য রাষ্ট্রপু‌ঞ্জ থেকে অনুমতি নিতে হয় তাঁদের।

Advertisement

আশরাফ গনির আমলে ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বেশ মজুবত হয়েছিল। আফগানিস্তানে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বিনিয়োগও করেছিল ভারত। তবে ২০২১ সালে মার্কিন সেনা আফগানিস্তান থেকে সরে গেলে পতন হয় গনি সরকারের। কাবুলের দখল নেয় তালিবানেরা। এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের তালিবান সরকার রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পায়নি। বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সঙ্গেই তাদের স্বীকৃত কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এখনও কূটনৈতিক স্বীকৃতি না-দিলেও তালিবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করে দেয়নি ভারত।

চলতি বছরের শুরুর দিকেই দুবাইয়ে মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক হয় ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর। ওই বৈঠকের পর থেকেই তালিবান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে কিছুটা আভাস মেলে। দুবাই-বৈঠকে তালিবান সরকার ভারতকে এক গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক এবং অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে ব্যাখ্যা করে। ভারত এখনও পর্যন্ত তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি না-দিলেও কাবুলে একটি প্রকৃত অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের দিকে বার বার জোর দিয়েছে। আফগান ভূমিকে যাতে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের জন্য ব্যবহার করা না-হয়, সে দিকেও জোর দিয়েছে ভারত। গত মে মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মুত্তাকির। এখনও পর্যন্ত এটিই দু’দেশের সরকারের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরের আলোচনা।

ছ’দিনের সফরে মুত্তাকির ভারতে আসা তাই কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং, সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলির সঙ্গে মুত্তাকির ভারত সফর একই সুতোয় গাঁথা। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরে ওই ঘটনার নিন্দা করেছিল তালিবান সরকার। তার পরে গত ১৫ মে জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা হয় মুত্তাকির। তত দিনে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিকে নিশানা করে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে ফেলেছে ভারত। আফগান মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের সময় পহেলগাঁও হামলার ধিক্কার জানানোর জন্য তালিবান সরকারের প্রশংসাও করেন জয়শঙ্কর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement