‘স্পেশ্যাল ২৬’-এর কায়দায় লুট ঠেকাতে নয়া পদক্ষেপ ইডির। ফাইল চিত্র।
অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘স্পেশ্যাল ২৬’-এর কথা মনে আছে? সেই ছবিতে দেখানো হয়েছে কী ভাবে ভুয়ো সিবিআই পরিচয়ে ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিকদের লুট করা হচ্ছে। তবে সেই সব ছাপিয়ে এখন ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর মতো ঘটনা আকছার ঘটছে। সাইবার অপরাধীরা নিজেদের কখনও সিবিআই, কখনও ইডি অফিসারের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কোটি কোটি টাকা লুট করছে। কখনও গ্রেফতারির ভয় দেখানো হচ্ছে। আর্থিক তছরুপের ভুয়ো নোটিস পাঠানো হচ্ছে ইডির নাম করে। আর তার ফাঁদে পড়েই অনেকে তাঁদের জীবনের সব সঞ্চয় খোয়াচ্ছেন।
দেশে বেড়ে চলা এমন সাইবার অপরাধ এবং ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’-এর মতো ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইডিও। তাদের নাম কাজে লাগিয়ে যে ভাবে প্রতারণা করা হচ্ছে, সেই ঘটনা রুখতে এ বার নয়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। ইডি জানিয়েছে, আর্থিক তছরুপ সংক্রান্ত কোনও মামলায় কাউকে তলব করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাঠানো নোটিসে কিউআর কোড দেওয়া হবে। আর সেই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই বোঝা যাবে, সেটি আসলেই ইডির তরফে তলব করা হয়েছে, না কি ইডির নাম করে কেউ প্রতারণা করার চেষ্টা করছেন। মূলত সাইবার প্রতারণা থেকে সতর্ক করতেই এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রের খবর।
নোটিসের সঙ্গে থাকা কিউআর কোড সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে সাহায্য করবে আদতে সত্যিই সেই নোটিস ইডির তরফে জারি করা হয়েছে কি না। দেশ জুড়ে বেশ কয়েকটি ঘটনার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সম্পর্কে জনসাধারণের মনে যাতে কোনও ভ্রান্ত ধারণার জন্ম না নেয়, সেই বিষয়টিতেও জোর দিতে এই পদক্ষেপ বলে ইডি সূত্রের খবর।
তলবি নোটিস আসল কি না, তা দু’দফায় যাচাইয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। নোটিসে কিউআর কোড ছাড়াও থাকবে একটি ‘ইউনিক পাসকোড’। সেটি নোটিসের নীচের দিকে থাকবে। খুব ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া, তলব নোটিসের ক্ষেত্রে সমস্ত আধিকারিককেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয় (সিস্টেম জেনারেটেড) হবে তলব নোটিস। সেখানে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের ইমেল আইডি, স্ট্যাম্প, স্বাক্ষর, যোগাযোগের নম্বর— সব কিছুই থাকবে।
তলবি নোটিস আসল কি না তা যাচাইয়ের জন্য যে পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে—
• নোটিসে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করতে হবে। সেটি স্ক্যান করলেই সরাসরি ইডির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট খুলে যাবে।
• তলবি নোটিসের নীচের অংশে থাকা পাসকোড দিতে হবে।
• যদি সেই পাসকোড মিলে যায়, তা হলে যাঁকে তলব করা হয়েছে, তাঁর সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেখতে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও কোন আধিকারিক তলবি নোটিস পাঠিয়েছেন, তাঁর পদমর্যাদা, কোন তারিখে নোটিস পাঠানো হচ্ছে ইত্যাদি তথ্যও পাওয়া যাবে।
• এ ছাড়াও ইডির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এনফোর্সমেন্ট ডায়রেক্টরেট ডট গভ ডট ইন-এ গিয়ে ‘ভেরিফাই ইওর সামন’ ট্যাবে ক্লিক করলেও তলব সংক্রান্ত বিষয় জানা যাবে।
তবে সব ক্ষেত্রেই তলব নম্বর, যেটি নোটিসের উপরের দিকে থাকবে এবং ইউনিক পাসকোড দিতে হবে।
ইডি আরও জানিয়েছে, তলব জারি করার ২৪ ঘণ্টা পর সেই তথ্য যাচাই করা যাবে।