একমাত্র মোদীই পারেন কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে: মেহবুবা

প্রশংসা করেও কাশ্মীর নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে প্যাঁচে ফেলে দিলেন মেহবুবা মুফতি।কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন— এ কথা বলে মোদীর উপর প্রবল চাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা।

Advertisement

নিজস্ব সং‌বাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

প্রশংসা করেও কাশ্মীর নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে প্যাঁচে ফেলে দিলেন মেহবুবা মুফতি।

Advertisement

কাশ্মীরের সমস্যার সমাধান একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন— এ কথা বলে মোদীর উপর প্রবল চাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা। কাশ্মীরের অগ্নিগর্ভ অবস্থা এমনিতেই কেন্দ্রের কাছে চ্যালেঞ্জের। তার মধ্যেই পরিস্থিতি সামলানোর যাবতীয় দায় কেন্দ্রের উপর ঠেলে দিয়েছেন পিডিপি নেত্রী।

কিছু দিন আগে থেকেই মেহবুবার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের টানাপড়েন প্রবল হয়েছে। দিন দশেক আগে দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মেহবুবা। কাশ্মীর পরিস্থিতি সামলাতে হুরিয়তের সঙ্গে আলোচনা শুরুর অনুরোধ করেন তিনি। বিজেপি ও সরকার যা খারিজ করে দিয়েছে। এর পরেই গত কাল জম্মুতে মেহবুবা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর মোদীর পিছনে বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। একমাত্র তিনিই পারেন কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে।’’ একই সঙ্গে মেহবুবা প্রস্তাব দেন, বাজপেয়ী আমলের ধাঁচে সরকার আলোচনার দরজা খুলুক। অনেকেই মনে করছেন, মোদী সরকারের সামনে বারবার বাজপেয়ীর তুলনা টেনে আনাটা মেহবুবার কৌশলী পদক্ষেপ। এক দিকে তিনি বোঝাতে চাইছেন, কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজপেয়ী সাফল্য পেলেও, মোদী তা পাচ্ছেন না। আর আলোচনায় বসে শান্তি ফেরানোর ডাক দিয়ে মোদীর কোর্টেই বল ঠেলে দিতে চেয়েছেন তিনি। আজও একই সুরে সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কুপওয়ারায় একটি অনুষ্ঠানে মেহবুবা বলেন, রাজ্যে উন্নয়নের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরি।

Advertisement

আরও পড়ুন:কুলগামে নিহত জঙ্গিকে গান স্যালুট সঙ্গীদের

কাশ্মীরে শাসক শিবিরের রাজনীতির উপর নজর রাখছেন যারা, তাঁদের অনেকেই মনে করেছেন, পিডিপি-বিজেপি জোট ভাঙনের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে বিজেপি এখনই সমর্থন তুলে সরকার ফেলার পক্ষপাতী নয়। তাদের যুক্তি, রাজ্যপাল শাসনের দায় আখেরে মোদীর ঘাড়েই এসে পড়বে। অন্য দিকে সেনার অতি-সক্রিয়তা, হুরিয়ত নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখা নিয়ে ক্ষুব্ধ মেহবুবা। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মতভেদ নিয়ে স্নায়ু যুদ্ধ চললেও, কোনও পক্ষই আগ বাড়িয়ে জোট ভাঙার সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। যদিও অনেকেই মনে করছেন, ভবিষ্যতে জোট ভাঙলে আলোচনার প্রশ্নে কেন্দ্রের নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে সমালোচনার রাস্তা খুলে রেখেছেন মেহবুবা।

কেন্দ্রকে মুফতি জানিয়েছেন, আলোচনা ও সন্ত্রাসদমন একই সঙ্গে চলুক কাশ্মীরে। হুরিয়তের সঙ্গে কথা হোক আবার জঙ্গি দমন অভিযানও চলুক। তবে কেন্দ্রীয় সরকারে কাশ্মীরের নীতি নির্ধারকদের একাংশের মত হল, বিক্ষুব্ধ জনতার উপর হুরিয়তের প্রভাব সীমিত। তাই আলোচনা করে আদৌও লাভ নেই। আর কাশ্মীরের যা পরিস্থিতি, তা আলোচনার জন্য অনুকূলও নয়। বরং নয়ের দশকের মতো লাগাতার অভিযান চালিয়ে কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে তাঁরা। দক্ষিণ কাশ্মীরের পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ঘরে-ঘরে ঢুকে তল্লাশি অভিযানও শুরু করেছে সেনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন