ভোটের গুজরাত যেন বদলের বাংলা

কথাটা শুনলে কংগ্রেস নেতাদের মুখে হাসি ফুটতে বাধ্য। কিন্তু সবরমতীর ঘোর কংগ্রেস সমর্থক নীলেশ ঠাকুর দোনামনা করে বলেন, ‘‘বিজেপির আসন কমবে ঠিকই। কিন্তু ওরা কি ভোটে হারবে! কেন জানি বিশ্বাস হয় না।’’

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share:

ভোটবার্তা: সুরাতে প্রধানমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।

টাইম মেশিনে চেপে যেন গুজরাত থেকে ২০১১-র আগের পশ্চিমবঙ্গে চলে এসেছি।

Advertisement

অমদাবাদের এলিস ব্রিজের বছর একুশের তরুণ কুণাল পটেল বলছেন, ‘‘বাইশ বছর বিজেপি ক্ষমতায়। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে একই সরকার দেখছি। এ বার পরিবর্তন দরকার।’’

কথাটা শুনলে কংগ্রেস নেতাদের মুখে হাসি ফুটতে বাধ্য। কিন্তু সবরমতীর ঘোর কংগ্রেস সমর্থক নীলেশ ঠাকুর দোনামনা করে বলেন, ‘‘বিজেপির আসন কমবে ঠিকই। কিন্তু ওরা কি ভোটে হারবে! কেন জানি বিশ্বাস হয় না।’’

Advertisement

অমদাবাদ থেকে রাজকোট, অহমেদ শাহর নগরী থেকে সৌরাষ্ট্র অঞ্চল— সর্বত্রই যেন ‘পরিবর্তন’-এর আগে পশ্চিমবঙ্গের চেনা ছবি। বাম জমানার শেষ পর্বের সঙ্গে মিল।

আবার অমিলও। অমিল হল, রাহুল গাঁধী বিজেপির পায়ের তলার জমি কাড়ছেন ঠিকই, কিন্তু গুজরাতে কংগ্রেসের কাছে কোনও ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’ নেই। যিনি শেষ ধাক্কাটা দেবেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভরতসিংহ সোলাঙ্কি রয়েছেন। শক্তিসিংহ গোহিল, অর্জুন মোডওয়ারিয়া, সিদ্ধার্থ পটেলের মতো পোড়খাওয়া সেনাপতিরাও হাজির। পিছনে ‘চাণক্য’ অাহমেদ পটেল। কিন্তু পুরনো অমদাবাদের জুহাপুরার মহম্মদ আসিফের মনে সংশয়, ‘‘বিনি সুতোর মালা গাঁথা যাবে না তো।’’ সোলাঙ্কি আশঙ্কা হেসে উড়িয়ে দিলেন— ‘‘পাঁচটা আঙুল মিলেই তো মুষ্টিযোগ হয়। তা ছাড়া অঙ্ক আমাদের পক্ষে।’’

আরও পড়ুন: সেজেও বিপত্তি! হার্দিকের দলের ছেলেদের কাছে মার খেলেন ‘মোদী’

কী সেই হিসেব? ২০১২-র বিধানসভা ভোটে ৪৮ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি ১১৫টি আসন জিতেছিল। ১৮২ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসের ছিল ৪০ শতাংশ ভোট। তবে জিতেছিল ৬১টা আসনে। সে বার ২৮টি আসনে কংগ্রেসের হারের ব্যবধান ছিল ৪ হাজার ভোটেরও কম। এ বার কংগ্রেসের তূণীরে নতুন তিন অস্ত্র— হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর ও জিগ্নেশ মেবাণী। অন্তত ৬০টি আসনে ১৫ শতাংশ পাতিদার ভোটার। সেই ভোট কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়লে খেলা ঘুরতে বাধ্য। সেই সঙ্গে কংগ্রেস বোঝাচ্ছে, এ বার ‘বদল’ দরকার। গুজরাতের মানুষ অবশ্য পরিবর্তন নিয়ে সে ভাবে মুখ খুলছে না। ঠিক যেমনটা হতো ২০১১-র আগের বাংলায়। ভয়ে তখন মুখ খুলতেন না গ্রামের মানুষ।

‘পরিবর্তন’-এর ঢেউ আছড়ে পড়ার আগেই বাঁধ দিতে নেমেছে বিজেপি। মোদী বলছেন, কংগ্রেস বরাবরই গুজরাতি-বিদ্বেষী। আর রূপাণীর যুক্তি, নরেন্দ্রভাইয়ের জমানায় গুজরাতের আরও উন্নতি ঠেকায় কে! এই সুযোগ কি হারানো উচিত!

গুজরাত নির্বাচন নিয়ে সব খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement