পালেকর নিয়ে সরকারকে তির বিরোধীদের

অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী অমোল পালেকরের বক্তৃতায় বাধা দেওয়া নিয়ে সরব হলেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, গত ১০ বছর ধরে এ ভাবেই শিল্পী, চিন্তাবিদ ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনেদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে আসছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

কণ্ঠরোধ: শুক্রবার মুম্বইয়ে অমোলকে বাধাদানের মুহূর্ত।

অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী অমোল পালেকরের বক্তৃতায় বাধা দেওয়া নিয়ে সরব হলেন বিরোধীরা। তাদের দাবি, গত ১০ বছর ধরে এ ভাবেই শিল্পী, চিন্তাবিদ ও অন্যান্য বিশিষ্ট জনেদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে আসছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

Advertisement

শুক্রবার ‘ন্যাশনাল গ্যালারি অব মডার্ন আর্ট’-এর মুম্বই কেন্দ্রে প্রয়াত শিল্পী প্রভাকর বারওয়ের ছবির প্রদর্শনীর উদ্বোধনে আমন্ত্রিত ছিলেন পালেকর। সেখানে বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘এক সময়ে ন্যাশনাল গ্যালারির মুম্বই ও বেঙ্গালুরুর কেন্দ্রে কোন প্রদর্শনী হবে তা নিয়ে স্থানীয় শিল্পীদের একটি উপদেষ্টা কমিটি সিদ্ধান্ত নিত। একতরফা ভাবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নিজেদের হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ওই কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।’’ পালেকরের বক্তব্যের মধ্যেই আপত্তি জানান শিল্পীদের কমিটির প্রাক্তন প্রধান সুহাস বহুলকর ও ন্যাশনাল গ্যালারির বর্তমান অধিকর্তা অনীতা রূপাভাতরম। পালেকর প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা কি আমার বক্তৃতার বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন?’’ তাঁকে বলা হয়, ‘‘আপনি শুধু প্রভাতকে নিয়ে কথা বলুন।’’ পালেকর পাল্টা বলেন, ‘‘সাহিত্যিক নয়নতারা সেহগলও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলায় সম্প্রতি তাঁকে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েও পরে প্রত্যাহার করা হয়। আপনারা কি তেমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি চাইছেন?’’ পরে অনীতা অমোলের সমালোচনা করে বলেন, তিনি শুধু মন্ত্রকের নিন্দাই করছেন!

আজ পুণেতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পালেকর ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা গোখলে। পালেকর দাবি করেন, ‘‘বক্তৃতার সময়ে প্রথমে আমাকে বাধা দেন গ্যালারির কিউরেটর জেসাল ঠাকর। কেবল প্রভাকর বারওয়ের কাজের বিষয় নিয়েই কথা বলতে বলেন তিনি। আমি যে প্রভাকরের কাজ নিয়ে কথা বলছিলাম না এমন নয়।’’ পালেকরের বক্তব্য, ‘‘এর পরে আরও কয়েক জন বাধা দিলেও আমি থামিনি। নয়নতারা সেহগলের প্রসঙ্গ টেনে আনি। শেষ পর্যন্ত জেসালের প্রতি সৌজন্যের খাতিরে আমি বক্তৃতা শেষ করে দিই।’’ সন্ধ্যার বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে মোবাইল ফোন ছিল বলে গোটা ঘটনাটা রেকর্ড করে নিই। না হলে ঘটনার প্রমাণই থাকত না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কার নামে চাঙ্গা লখনউ

তবে ন্যাশনাল গ্যালারির তরফে এ দিন দাবি করা হয়েছে, শিল্পীদের উপদেষ্টা কমিটি আদৌ ভেঙে দেওয়া হয়নি। ওই কমিটির মেয়াদ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। প্রদর্শনীর বিষয়ে পুরনো কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হয়েছে। নতুন প্রদর্শনী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নতুন কমিটি।

কংগ্রেসের দাবি, গত ১০ বছর ধরে এ ভাবেই সরকার শিল্পী, চিন্তাবিদ ও বিশিষ্ট জনেদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের বক্তব্য, ‘‘কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। কাউকে বলতে দেওয়া হয় না। এটাই তো নতুন ভারত। মোদীজি এই অচ্ছে দিনের কথাই বলতেন।’’ আম আদমি পার্টির নেত্রী অলকা লাম্বার মতে, ন্যাশনাল গ্যালারির দুই কর্ত্রী জেসাল ও অনীতা লজ্জাজনক ব্যবহার করেছেন। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি আসলে গোটা দেশকে একরঙা করে তুলতে চায়। পালেকরকে চুপ করতে বলায় সরকারের ভীত চেহারাটাই সামনে চলে এল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন