নরেন্দ্র মোদী।
হায়দরাবাদ বা উন্নাও নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি তিনি। পুণেতে পুলিশকর্তাদের সম্মেলনে আজ নরেন্দ্র মোদী শুধু বলেছেন, ‘‘পুলিশ ব্যবস্থাকে হতে হবে কার্যকরী, যাতে মহিলারা নিজেদের নিরাপদ ও সুরক্ষিত মনে করেন। পুলিশকর্তারা যেন সব সময়ে বাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেন, যাতে মহিলা ও শিশু-সহ দেশের সমস্ত স্তরের মানুষ ভরসা পান।’’ এতে অবশ্য বিরোধীরা সন্তুষ্ট নন। মোদীর ২০১৪-র ভিডিয়ো সামনে এনেছে কংগ্রেস। যাতে দেখা যাচ্ছে, ভোটের আগে ভরা জনসভায় মোদী এক নিঃশ্বাসে দু’টি প্রশ্ন আর দু’টি অভিযোগ করছেন।
প্রথম প্রশ্ন, রোজ দিল্লি থেকে ধর্ষণের খবর আসছে কি না। দ্বিতীয় প্রশ্ন, দিল্লি ‘ধর্ষণের রাজধানী’ হয়ে গিয়েছে কি না।
প্রথম অভিযোগ, দেশের রাজধানীই ‘ধর্ষণের রাজধানী’ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বের সামনে লজ্জায় ভারতের মাথা কাটা যাচ্ছে। দ্বিতীয় অভিযোগ, ‘‘মা-বোনেদের নিরাপত্তার জন্য আপনাদের (কংগ্রেস সরকারের) কোনও পরিকল্পনা নেই, দমও নেই।’’
তখন মোদী একের পর এক ইস্যুতে কংগ্রেসকে বিঁধতেন। নির্ভয়ার জন্য রাজধানীতে জলকামানের মুখে দাঁড়িয়েছিলেন প্রতিবাদীরা। মোদী বলতেন, ‘‘ভোটদাতারা যেন দেশে ধর্ষণের ঘটনাগুলো আর ওই জলকামানের কথা মনে রাখেন।’’ এখন হায়দরাবাদ, উন্নাও, ত্রিপুরা— নানা প্রান্তে নারী নির্যাতন সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী চুপ। অথচ আজ দিল্লির আগুন, অরুণ শৌরিকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়া নিয়ে টুইট করেন তিনি।
ধর্ষণের ঘটনাকে সামনে রেখেই বিজেপি-বিরোধী প্রচার সংগঠিত করতে চাইছেন সনিয়া গাঁধীরা। মোদীর ভাষাতেই রাহুল গাঁধী বলেছেন, ‘‘ভারত ধর্ষণের রাজধানী হয়ে ওঠায় গোটা দুনিয়া উপহাস করছে।’’ সনিয়া আজ নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন, উন্নাও ও ত্রিপুরার ঘটনা কাল সংসদে জোরালো ভাবে তুলতে হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে। কাল নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন সনিয়া। সূত্রের বক্তব্য, বোন প্রিয়ঙ্কাকে রাহুল বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে আন্দোলন জোরালো করতে। গত কালই প্রিয়ঙ্কা উন্নাওয়ে যেতেই অখিলেশ যাদব ধর্নায় বসেন। মায়াবতী ছোটেন রাজ্যপালের কাছে।
কংগ্রেসের বক্তব্য, এ বিষয়ে বিভিন্ন দলের রেষারেষির প্রশ্ন নেই। বিরোধীরা একজোট হতেই পারে, বিশেষত মোদী যখন চুপ। বিজেপি শিবির বলছে, প্রধানমন্ত্রী কি চুপ করে বসার পাত্র? কড়া পদক্ষেপ করে যে কোনও দিন পুরো আবেগই ঘুরিয়ে দিতে পারেন তিনি!