End Use Monitoring Agreement

শর্ত ছিল সন্ত্রাস দমন, ভারতের বিরুদ্ধে সেই এফ-১৬ ব্যবহার করে মার্কিন কোপে পড়বে পাকিস্তান?

ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ ‘এন্ড ইউজ় মনিটরিং’ চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা তিন দশক আগে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের উন্নততর সংস্করণগুলি পাক বায়ুসেনাকে দিয়েছিল মূলত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ব্যবহারের জন্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২৫ ১৩:০৫
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শর্ত ছিল, আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের জন্যই ব্যবহার করা যাবে। পাক বাহিনীর এফ-১৬ যুদ্ধবিমানগুলির উপর নিয়মিত নজরদারির বন্দোবস্তও ছিল চুক্তিতে। কিন্তু তা ফাঁকি দিয়েই ভারতের বিরুদ্ধে আঘাত হানতে পাক বিমানবাহিনী ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ ‘এন্ড ইউজ় মনিটরিং’ চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা তিন দশক আগে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের উন্নততর সংস্করণগুলি পাকিস্তানকে দিয়েছিল মূলত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ব্যবহারের জন্য। মূলত আফগানিস্তানের প্রেক্ষাপটে। অন্য কোনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে ওয়াশিংটনের অনুমোদন ছাড়া ওই বিমান ব্যবহারের অনুমোদন ইসলামাবাদের নেই। যদি পাকিস্তান এই শর্ত ভঙ্গ করে, তবে যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ সরবরাহ এবং রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি বাতিল হতে পারে। এমনকি, নিষেধাজ্ঞার খাঁড়াও নেমে আসতে পারে ইসলামাবাদের উপর।

যদিও ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর বালাকোটে ভারতীয় বিমান হামলার প্রেক্ষিতে অভিযোগ উঠেছিল, পাকিস্তান এফ-১৬ ব্যবহার করে ভারতে আঘাত হেনেছে। যদিও সে সময় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নীরব ছিল আমেরিকা। তবে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তা লঙ্ঘন করলেও ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করে পারবে না ওয়াশিংটন। প্রসঙ্গত, আশির দশকের মধ্যপর্বে প্রথম এফ-১৬ পাকিস্তানকে দিয়েছিল আমেরিকা। আফগানিস্তানে তখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সোভিয়েত ফৌজ। বন্ধুরাষ্ট্র পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিল পেন্টাগন। তৎকালীন পাক সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউল হক সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলেন।

Advertisement

এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন যুদ্ধবিমানের নির্মাতা ছিল মার্কিন সংস্থা জেনারেল ডায়নামিক্স। পরবর্তী সময়ে ওই যুদ্ধবিমানের উন্নততর সংস্করণ নির্মাণের দায়িত্ব পায় আর এক মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিন। নব্বইয়ের দশকের শেষ পর্বে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের জমানায় উন্নততর এফ-১৬ পাওয়ার লক্ষ্যে এবং হাতে থাকা যুদ্ধবিমানগুলির আধুনিকীকরণের জন্য ‘এন্ড ইউজ় মনিটরিং’ চুক্তি করেছিল ইসলামাবাদ। এর পরে বারাক ওবামার জমানায় পাকিস্তানকে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়েছিল ওয়াশিংটন। ২০২২ সালে জো বাইডেনের সরকার সেই যুদ্ধবিমানগুলির দ্বিতীয় দফার আধুনিকীকরণের ‘প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছিল। সে সময় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরমাণু অস্ত্র বহনক্ষম যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন কী? ওই এফ-১৬ কাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য পাকিস্তান কিনছে, তা গোটা বিশ্ব জানে।’’ সেই আশঙ্কা সত্যি হল বুধবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement