মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন অফিসার কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীকে দেখা করার অনুমতি আগেই দিয়েছিল পাকিস্তান। এ বার তাঁর মা অবন্তিকা যাদবকেও দেখা করার ছাড়পত্র দিল পাক সরকার। পাক বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী ২৫ ডিসেম্বর জেলবন্দি কূলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁরা।
পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সাল জানিয়েছেন, মা এবং স্ত্রী ছাড়াও ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কোনও এক জন অফিসারকেও দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে।
এর আগে বহু বার কূলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছে ভারত। কিন্তু পাকিস্তান তাতে সাড়া দেয়নি। পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজকে ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি লিখে কুলভূষণের মায়ের জন্য ভিসার আবেদন জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
আরও পড়ুন:
লোডশেডিং হলে এ বার ফাইন দিতে হবে বিদ্যুৎ সংস্থাকে
শুক্রবার টুইটারে সুষমা জানিয়েছেন, কূলভূষণের মা এবং স্ত্রীকে ভিসা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে পাক সরকার। পাকিস্তানে তাঁদের সবরকম ভাবে সাহায্য করার জন্য ভারতীয় দূতাবাসের এক জন অফিসারের সঙ্গেও কথাবার্তা বলা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘‘প্রথমে শুধুমাত্র স্ত্রীকে কূলভূষণের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল পাকিস্তান। পরে আমরা আবেদন জানাই তাঁর মাকেও দেখা করার অনুমতি দেওয়া হোক। সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছে পাকিস্তান। সফরকালে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়েও পাকিস্তানের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’’
গত বছরের ৩ মার্চ ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ পাকিস্তানের বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার হন। ইসলামাবাদের অভিযোগ ছিল, ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর সদস্য কুলভূষণ নাশকতামূলক কাজের জন্য পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন। ভারত সরকার সেই অভিযোগ খারিজ করে জানায়, কুলভূষণ আদৌ কোনও গুপ্তচর নন। নৌ বাহিনী ছাড়ার পরে তিনি ইরানে ব্যবসা করতেন, কোনও ভাবে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন। ভারতের যুক্তি মানেনি ইসলামাবাদ। কুলভূষণকে মুক্তি দেওয়া তো দূর, পাক সামরিক আদালতে বিচার চলে তাঁর। গত এপ্রিলে কুলভূষণের ফাঁসির আদেশ হয় সেখানে। কিন্তু ভারত সরকার এই মামলা আন্তর্জাতিক আদালত পর্যন্ত নিয়ে যায়। ভারতীয় কনস্যুলেট কর্মীদের সঙ্গে কুলভূষণকে দেখা করতে না দিয়ে পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনের চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলেও অভিযোগ তোলে নয়াদিল্লি। আন্তর্জাতিক আদালত কূলভূষণের ফাঁসির আদেশে স্থগিতাদেশ দেয়। আদালত জানায়, সেখানে শুনানি শেষ হওয়ার আগে কুলভূষণকে ফাঁসি দিতে পারবে না পাক সরকার।