কাল সম্প্রীতি তো আজ শত্রুতা! কূটনৈতিক নাগরদোলার অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপন ভারত এবং পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সম্পর্ক!
সম্প্রতি একটি ঘরোয়া আড্ডায় কিছুটা ঠাট্টার সুরেই এ কথা বলেছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের এক পোড় খাওয়া কূটনীতিবিদ। বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যত সময় যাচ্ছে, এই উক্তির সারবত্তা যেন তত বেশি করে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। যার সাম্প্রতিকতম সংস্করণটি দেখা গিয়েছে গত চব্বিশ ঘণ্টায়। পাক বিমানে ইয়েমেন থেকে উদ্ধার হওয়া ভারতীয়রা গত কালই দিল্লি ফিরেছেন ও এই ‘সৌজন্যে’র জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ধন্যবাদও জানান মোদী। এর পরে কেটেছে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। ২৬/১১ মুম্বই হামলার প্রধান চক্রী জাকিউর রহমান লকভিকে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ফের মুক্তির নির্দেশ দিতে উধাও সৌজন্যের আবহাওয়া। লকভির মুক্তির নির্দেশের খবর পাওয়া মাত্রই কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরুদ্দিন বলেন, ‘‘অতীতে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি পাক সরকারকে। আবারও তা জানানো হবে। ঘটনা হল, একজন দাগী সন্ত্রাসবাদীকে শাস্তি না দেওয়া হলে তা ভারত তথা গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার পক্ষে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধের প্রশ্নে বারবার আমাদের যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তার মূল্যও এই সব ঘটনার ফলে কমে যাচ্ছে।’’
সাউথ ব্লক মনে করছে, লকভিকে মুক্ত করতে গত চার মাস ধরেই দফায় দফায় পাকিস্তানের প্রভাবশালী অংশের পক্ষ থেকে আদালতের উপর চাপ তৈরি হয়েছে। ভারত-বিরোধী গতিবিধি বাড়াতেই লকভিকে মুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। ফলে লকভি শাস্তি পাবে কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ আছে নয়াদিল্লির। দিল্লির বক্তব্য, লকভি যাতে শাস্তি পায়, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সাহায্য নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।