আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানের মাথা কাটল পাক বাহিনী

ইমরান খান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সীমান্তে পাক বাহিনীর মনোভাব যে আদৌ বদলায়নি তা প্রমাণ হল। জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে এক বিএসএফ জওয়ানকে গুলি করে তাঁর মাথা কেটে নিল পাক বাহিনী। নিয়ন্ত্রণরেখায় আগে ভারতীয় সেনার উপরে এই ধরনের হামলা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জম্মু ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

নরেন্দ্র কুমার।

ইমরান খান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সীমান্তে পাক বাহিনীর মনোভাব যে আদৌ বদলায়নি তা প্রমাণ হল। জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে এক বিএসএফ জওয়ানকে গুলি করে তাঁর মাথা কেটে নিল পাক বাহিনী। নিয়ন্ত্রণরেখায় আগে ভারতীয় সেনার উপরে এই ধরনের হামলা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্তে এমন ঘটনার নজির নেই। ফলে সীমান্তে পাক হামলা আরও তীব্র হল বলেই মনে করছেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা।

Advertisement

গত কাল জম্মুর রামগড় সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে সরকন্দা ঘাস কাটতে যায় বিএসএফের একটি দল। বিএসএফ সূত্রে খবর, ওই এলাকায় ভারতের দিকে জলাভূমি রয়েছে। তাই গোটা এলাকা বড় বড় সরকন্দা ঘাসে ঢাকা। যাতায়াতের সুবিধের জন্য ওই এলাকায় মাঝে মাঝে ঘাস কাটার প্রয়োজন হয়। গত কাল সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ওই বিএসএফের দলটির উপরে হামলা চালায় পাক রেঞ্জার্স। বিএসএফ জানিয়েছে, ভারতীয় জওয়ানেরাও জবাব দেন। কিন্তু পাক স্নাইপারের গুলিতে নিহত হন হেড কনস্টেবল নরেন্দ্র কুমার।

বিএসএফ সূত্রের খবর, ঘটনার পরেই নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধারের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ওই এলাকা জলাভূমি। ফলে সীমান্তের কাছে গিয়ে জওয়ানের দেহ উদ্ধারের ক্ষেত্রে ভারতীয় ও পাকিস্তানি বাহিনী একসঙ্গে কাজ করলে সুবিধে হবে বলে বুঝতে পেরেছিলেন বিএসএফ কর্তারা। কিন্তু পাক বাহিনী সীমান্তের ওপার থেকে কিছুটা এগিয়ে আসার পরে জানায়, তাদের পক্ষে আর এগনো সম্ভব নয়। কারণ, ওই এলাকায় জল জমে রয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: এ শুধুই ভোট রাজনীতি! দাবি ক্ষুব্ধ ল বোর্ডের

পাকিস্তানের এই মনোভাবের ফলে সূর্যাস্তের আগে নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করতে পারেনি বিএসএফ। কারণ, ভারতীয় জওয়ানদের যে ফের নিশানা করা হবে না তার নিশ্চয়তা ছিল না। সূর্যাস্তের পরে জলাভূমিতে নেমে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে নরেন্দ্রর দেহ উদ্ধার করেন জওয়ানেরা। দেখা যায়, তাঁর দেহে তিনটি বুলেটের ক্ষত রয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর মাথা কেটে নিয়েছে পাক বাহিনী। হরিয়ানার সোনীপতে কালা গ্রামের বাসিন্দা নরেন্দ্র ১৯৯০ সালে বিএসএফে যোগ দেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছেন।

বিএসএফ জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেনার ডিরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশনস স্তরে এ নিয়ে পাকিস্তানের কাছে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা ও বিএসএফকে সতর্ক করা হয়েছে। সেনা কর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর মে মাসে নিয়ন্ত্রণরেখায় এ ভাবেই হামলা চালিয়ে দুই ভারতীয় সেনাকে খুন করেছিল পাক সেনার ব্যাট বাহিনী। এই হামলাও ওই বাহিনীই চালিয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: রাফাল নিয়ে সিএজি তদন্ত চায় কংগ্রেস

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘পাকিস্তানকে জবাব দিতে কী পদক্ষেপ করছেন?’’ জবাবে নির্মলা বলেন, ‘‘আমরাও মাথা কাটছি। কিন্তু তা সকলের সামনে তুলে ধরছি না।’’ আন্তর্জাতিক সীমান্তের এই ঘটনার পরে বিরোধীদের প্রশ্ন, ৫৬ ইঞ্চি ছাতির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় আর কত জওয়ানকে শহিদ হতে হবে? তাঁদের মতে, সরকারের পাকিস্তান নীতি একেবারে ব্যর্থ হয়েছে। বিএসএফের এক কর্তার দাবি, ‘‘ঠিক সময়ে পাল্টা হামলা চালানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন