পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। ছবি: রয়টার্স।
পূর্ব এবং পশ্চিম— দু’দিক দিয়েই পাকিস্তানকে ‘ব্যস্ত’ রাখতে চায় ভারত। তাই তাদের পশ্চিম দিকের প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানকেও ‘নিয়ন্ত্রণ’ করছে নয়াদিল্লি। এমনটাই দাবি করলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। সম্প্রতি একটি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। পাকিস্তানে ভারতের সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের প্রমাণ তাঁর কাছে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন। যদিও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে গত মাস থেকে সংঘর্ষে জড়িয়েছে পাকিস্তান। আফগান রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালিয়েছে। পাল্টা তালিবানি সেনাও পাক সীমান্তে প্রত্যাঘাত করেছে। আপাতত দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চলছে। এই সংক্রান্ত আলোচনার মধ্যস্থতা করছে তুরস্ক, কাতারের মতো ‘বন্ধু’ দেশ। কিন্তু আফগানদের সঙ্গে সংঘর্ষের শুরু থেকেই ভারতের দিকে আঙুল তুলেছে ইসলামাবাদ। তাদের দাবি, ভারতের মদতে পাক সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলে। তালিবান চলে ভারতের কথায়। আফগানিস্তান এবং ভারত প্রথম থেকেই এই সমস্ত দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
পাক সংবাদমাধ্যমকে আসিফ বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদে যে ভারতের হাত রয়েছে, আমাদের কাছে তার প্রমাণ আছে। আসলে পূর্ব এবং পশ্চিম দু’দিক থেকে পাকিস্তানকে ব্যস্ত রাখতে চায় ওরা।’’ তালিবানের ভূমিকা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘‘কাবুলের লোকজনকে পুতুলনাচ নাচানো হচ্ছে। যাঁরা এই পুতুলনাচ মঞ্চস্থ করছেন, তাঁরা দিল্লির নিয়ন্ত্রণে।’’
তবে কাতার এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় পাক-আফগান দ্বন্দ্বের ইতিবাচক সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী আসিফ। বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান সমস্যার দ্রুত সমাধান প্রয়োজন। এটা পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলেই জানেন। আফগান মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হওয়া দরকার।’’
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের মাটিতে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় পাকিস্তানি তালিবান বা তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবানেরই একটি শাখা এই গোষ্ঠী। ইসলামাবাদের দাবি, নয়াদিল্লির অঙ্গুলিহেলনে এই গোষ্ঠীর কাজকর্ম চলে। এখনও পর্যন্ত এই দাবির সপক্ষে তারা কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
গত মাসের শুরু থেকে আফগানিস্তানের সঙ্গে তালিবানি সেনা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। সীমান্তে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও এখনও দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে। তার মাঝেই ফের আফগান প্রসঙ্গে নয়াদিল্লিকে টানলেন পাকিস্তানের মন্ত্রী। বস্তুত, পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তের অধিকাংশ জুড়েই রয়েছে আফগানিস্তান। পূর্ব সীমান্তে রয়েছে ভারত। গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনা সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। সেই কারণেই দু’দিক থেকে ইসলামাবাদকে ব্যস্ত রাখার কথা বলতে চেয়েছেন আসিফ। তবে প্রমাণ দেখাতে পারেননি।