ভুত-জিনের ‘আতঙ্কে’ তটস্থ হাইলাকান্দির প্রত্যন্ত একটি গ্রামের বাসিন্দারা!
কারণটাও অদ্ভূত। এক গ্রামবাসীর বাড়ির আনাচে কানাচে নাকি য়খন তখন আগুন জ্বলে উঠছে। কখনও উঠোনের খড়ের স্তূপে, কখনও জানালার পর্দায়, কখনও বা বেডকভার, দড়িতে টাঙানো কাপড়ে। এমনকী বাড়ির এক মহিলার ওড়নাও নিস্তার পায়নি। ‘ভৌতিক’ এ সব কাণ্ড-কারখানা দেখে চোখে চড়কগাছ আলগাপুর সার্কেলের বোয়ালিপার ভাটিরকুপা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবউত্তর গ্রামের বাসিন্দা আবু বকর লস্করের পরিবার। সব ঠিকঠাকই চলছিল। সমস্যার সূত্রপাত গত শুক্রবার। রাতে আচমকা বাড়ির উঠোনে খড়ের স্তূপে আগুন ধরে যায়। ঘরের লোকের চিৎকারে পাড়ার লোকরা মিলে আগুন নেভান। পর দিন দুপুরের দিকে সে বাড়ির জানালার পর্দায় আগুন জ্বলে ওঠে। এর পরই আত দানা বাধে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সে দিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কয়েক বার একই রকম কাণ্ড ঘটেছে আবু বকরের বাড়িতে। কী ভাবে আগুন লাগছে তা বোঝাই যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে হাইলাকান্দির অতিরিক্ত জেলাশাসক এফ আর লস্করের কাছে খবর গিয়েছে। বিষয়টি হাইলাকান্দি পুলিশেরও নজরে এসেছে।
কুসংস্কারে আচ্ছন্ন গ্রামবাসীরা একে ভুত-জিনের তাণ্ডব বলেই চিহ্নিত করছেন। তাঁরা বলছেন, কোনও অপশক্তি রেগে এ সব কাজ করছে। একের পর এক ভুত তাড়ানোর ওঝা, পিরবাবাকে ওই বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। গৃহকর্তা আবু বকর বলেন, ‘‘ঘরে একের পর এক জিনিসে আগুন লাগছে। কী ভাবে এ সব হচ্ছে বুঝতেই পারছি না।’’
হাইলাকান্দি এস এস কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রাক্তন অধ্যাপক বিজয় কুমার ধর বলেন, ‘‘কোনও উৎস ছাড়া এ ভাবে আগুন লাগতে পারে না। বিষয়টি খুঁটিয়ে দেখতে হবে।’’
আজ শিবউত্তর গ্রামে আবু বকরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক জিনিসেই পোড়া দাগ রয়েছে। একের পর এক মোল্লাকে ডেকে অপশক্তিকে তাড়ানোর চেষ্টা চলছে। তবে, বিকেল পর্যন্ত ওই গ্রামে পুলিশ বা প্রশাসনের কারও পৌঁছনোর খবর মেলেনি।
গ্রামের একাংশ বিজ্ঞান-সচেতন বাসিন্দার বক্তব্য, ফসফরাস জাতীয় পদার্থের বিক্রিয়ায় এমন কাণ্ড হতে পারে। ভয় দেখিয়ে ওই পরিবারকে ভিঁটেছাড়া করার জন্যও কেউ এমন ষড়যন্ত্র করতে পারে।