উত্তরকাশীর হড়পা বানে নিখোঁজ শ্রমিকের বাবা বিজয় সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে হড়পা বানের পর থেকেই পুত্রের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে নেপালি দম্পতির। কোথায় তাঁদের সন্তান, মরিয়া হয়ে খুঁজে চলেছেন তাঁরা। হড়পা বান যখন নেমে এসেছিল, ঠিক সেই মুহূর্তেই পুত্রের কাছ থেকে ভয়ার্ত কণ্ঠে ফোন পেয়েছিলেন কালী দেবী এবং তাঁর স্বামী বিজয় সিংহ। বিজয়কে ফোন করে তাঁদের পুত্র বলেছিলেন, ‘‘বাবা, আর মনে হয় বাঁচব না। নালায় অনেক জল।’’ কালী দেবী জানিয়েছেন, ওটাই ছিল পুত্রের সঙ্গে তাঁদের শেষ কথা। তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারছেন না।
নেপাল থেকে ২৬ জনের একটি শ্রমিকদল নির্মাণের কাজে উত্তরকাশীর ধরালী গ্রামে এসেছিল। সেই দলেই ছিলেন কালী দেবী এবং বিজয়। বিপর্যয়ের ঠিক আগেই তাঁরা ধরালী ছেড়ে ৪৭ কিলোমিটার দূরে ভটওয়ারীতে চলে গিয়েছিলেন। তবে বাকি শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের একমাত্র সন্তান ছিলেন ধরালীতেই। তাঁদেরও কারও খোঁজ মিলছে না। দুর্যোগের খবর পেয়েই আবার ভটওয়াডরী থেকে ধরালীর উদ্দেশে রওনা দেন কালী দেবী এবং বিজয়। গঙ্গাওয়ারী পর্যন্ত হেঁটে পৌঁছেছেন তাঁরা। কিন্তু তার বেশি এগোতে পারছেন না। কারণ, ধরালীতে পৌঁছোনোর মূল সেতুই হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে।
কালী দেবী বলেন, ‘‘আমরা যখন হর্ষিল উপত্যকা ছেড়ে ভটওয়ারী রওনা দিয়েছিলাম, কে জানত এত বড় বিপদ নেমে আসবে! যদি আগে জানতাম, তা হলে ছেলেকে ওখানে রেখে আসতাম না। সরকারের কাছে আবেদন, হর্ষিল উপত্যকায় আমাদের নিয়ে চলুন। ছেলেকে খুঁজে বার করতে চাই।’’ ছেলেকে ফিরে পাবেন তো? এই আশঙ্কাতেই ছটফট করছেন নেপালি দম্পতি। তাঁদের বিশ্বাস, ধরালীতে গেলেই ছেলেকে ঠিক খুঁজে বার করবেন। কিন্তু সেই উপায়ও নেই। কারণ পুরো ধরালী ধসের নীচে চলে গিয়েছে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর জেলার ধরালীতে নেমে এসেছিল হড়পা বান। সেই দুর্যোগে এখনও পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি নিখোঁজ। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের।