আমিরকে পর্রীকরের আক্রমণ ঘিরে রাজনৈতিক তরজা ফের চড়ছে। —ফাইল চিত্র।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর আক্রমণের মুখে বলিউড সুপারস্টার। অসহিষ্ণুতা সংক্রান্ত বিতর্কে আমির খানের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করলেন মনোহর পর্রীকর। আমির খানের নাম অবশ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী উচ্চারণ করেননি। কিন্তু অসহিষ্ণুতা নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক চলাকালীন যে মন্তব্য আমির খান করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে আমিরকে শনিবার ‘উদ্ধত’ বললেন পর্রীকর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস। দলের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী পর্রীকরকে ‘কাপুরুষ’ আখ্যা দিয়েছেন।
সাংবাদিক তথা লেখক নিতিন গোখেল সিয়াচেন নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, তার মরাঠি সংস্করণের প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শনিবার ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। সেখানেই পর্রীকর বলেন, ‘‘এক জন অভিনেতা বলেছিলেন, তাঁর স্ত্রী ভারতের বাইরে থাকতে চান। ওই মন্তব্য ছিল একটি উদ্ধত মন্তব্য। যদি আমি গরিব হই এবং আমার বাড়িটা ছোট হয়, তা হলেও আমি আমার বাড়িটাকেই ভালবাসব এবং সেটাকে একটা বাংলো করে তোলার স্বপ্ন দেখব।’’
পর্রীকর আমির খানের নাম উচ্চারণ না করলেও, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর খোঁচা যে তাঁর উদ্দেশেই, তা স্পষ্ট। যে মন্তব্যের কথা পর্রীকর উল্লেখ করেছেন, সেটি আমির খানের স্ত্রী কিরণ রাওয়ের মন্তব্য। আমির নিজেই সে কথা জানিয়েছিলেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দেশবিরোধী স্লোগান’-এর অভিযোগ তুলে ধুন্ধুমার, দাদরি কাণ্ড, কালবুর্গীর হত্যা সহ পর পর কয়েকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে গোটা দেশে যখন অসহিষ্ণুতা বিতর্ক ঝড় তুলে দিয়েছিল, সে সময় আমির খানও মুখ খোলেন। বলিউড সুপারস্টার তখন বলেছিলেন, ‘‘যখন আমি ঘরে বসে কিরণের সঙ্গে কথা বলি, তখন ও আমায় বলে, আমাদের কি ভারত ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত? কিরণের মুখ থেকে এমন মন্তব্য খুব বড় ব্যাপার। সে তার সন্তানদের কথা ভেবে ভয় পায়। আমাদের চার পাশে পরিবেশটা কেমন হয়ে উঠবে, সেটা ভেবে কিরণ ভয় পায়। রোজ সকালে খবরের কাগজটা খুলতে সে ভয় পায়।’’ ২০১৫ সালের নভেম্বরে আমির খান এই কথাগুলি বলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনেই আমিরকে শনিবার আক্রমণ করেন মনোহর পর্রীকর।
আরও পড়ুন: দলাই লামার বিরুদ্ধে চক্রান্তে যুক্ত বলেই বহিষ্কৃত তিন চিনা সাংবাদিক
বলিউড সুপারস্টারকে শুধু উদ্ধত বলেই থামেননি পর্রীকর। তাঁর দিকে আরও কটাক্ষ ছুড়েছেন তিনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানান, অভিনেতার ওই মন্তব্যের বিরুদ্ধে বহু মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন এবং ওই অভিনেতা যে অনলাইন শপিং সাইটের বিজ্ঞাপন করতেন, অনেকেই নিজেদের মোবাইল থেকে সেই সাইটের অ্যাপ আনইনস্টল করে দিয়েছিলেন। বিপদ বুঝে অনলাইন শপিং সাইটটিও ওই অভিনেতাকে বিজ্ঞাপন থেকে সরিয়ে দেয় বলে পর্রীকর মন্তব্য করেন।
আমিরের সঙ্গে জেএনইউ-এর পড়ুয়াদের একাংশকেও বিঁধেছেন পর্রীকর। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস লোকজন পান কোথা থেকে? যাঁরা দেশবিরোধী কথাবার্তা বলেন, এই দেশের মানুষের উচিত তাঁদের উচিত শিক্ষা দেওয়া।’’
আমির খান নিজে পর্রীকরের এই মন্তব্যের জবাব এখনও দেননি। তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে এক হাত নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেনি কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর দফতর থেকে রবিবার টুইট করা হয়েছে, ‘‘আরএসএস এবং পর্রীকর’জি সবাইকে শিক্ষা দিতে চান। আপনাদের একটা শিক্ষা দিই: ঘৃণা হল কাপুরুষের সম্পত্তি এবং তার জয় কখনও হয় না।’’