চিত্রকলা: পটনার সেই দেওয়াল চিত্রণ। নিজস্ব চিত্র
নতুন সাজে সেজে উঠছে পটনা। প্রায় পাঁচশো চিত্রশিল্পীর এক বিশাল দল শহরের প্রায় সমস্ত দেওয়ালে মধুবনী চিত্রকলা তুলে ধরছেন। পটনা পুরসভার উদ্যোগে এই কাজে হাত মিলিয়েছে আর্ট কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও। পটনার মেয়র সীতা সাহুর কথায়, ‘‘শহরের স্বচ্ছতা এবং রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। পটনার পরিবর্তন সকলেই বুঝতে পারছেন।’’ শুধু দেওয়াল-চিত্রণই নয়, নিয়মিত এই চিত্রকলার সংস্কারও করা হবে বলে তিনি জানান।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পটনা শহরে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষের বাস। এছাড়াও প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ জীবন-জীবিকা, পড়াশোনার জন্য পটনায় আসেন। গোটা শহর জুড়ে ট্রাফিক জ্যাম, অপরিচ্ছন্নতা মানুষকে ক্রমশ হতাশ করে তুলছিল। দূষণের পরিমাণও নেহাত কম নয়। প্রতিদিন শহরে প্রায় ৯০০ মেট্রিক টন আবর্জনা তৈরি হয়। ২০১৭ সালে দেশের শহরগুলির স্বচ্ছতার তালিকায় পটনা ২৬২ নম্বরে। আর সে কথা মাথায় রেখেই শহরকে ঢেলে সাজাতে চাইছে পুরসভা। মেয়রের কথায়, ‘‘শহরকে মানুষের বাসযোগ্য করে তুলতে হবে।’’ দরজা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ, রাস্তা পরিষ্কার, রাস্তায় ডিভাইডার, ফুটপাত সংস্কার, আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ তৈরির মতো প্রকল্প ইতিমধ্যেই হাতে নিয়েছে পুরসভা। তারই সঙ্গে জুড়েছে শহরের দেওয়াল জুড়ে মধুবনী বা মৈথিলি চিত্রকলা।
আপাতত শহরের ৩০টিরও বেশি এলাকাকে দেওয়াল-চিত্রণের জন্য বাছা হয়েছে। প্রায় ৫০০ জন শিল্পীর তুলিতে দিনে দিনে পাল্টে যাচ্ছে শহর। প্রথম দফার কাজ শেষ হওয়ার মুখে। ফ্রেজার রোড থেকে শুরু করে বেলি রোড, সর্বত্র মধুবনী চিত্রকলায় খুশি সাধারণ পথচারী থেকে রাজনৈতিক নেতারা। চিত্রশিল্পীদের অধিকাংশই মধুবনীর। পেশাদারদের সঙ্গে রয়েছেন নতুনরাও।
দেওয়ালে কোথাও রাম-সীতা, কোথাও গুরু গোবিন্দ সিংহ, কোথাও দশভুজা দুর্গা। ঠাঁই পাচ্ছে সাম্প্রতিক নানা বিষয়ও। শিল্পী বিশাল মিশ্রের কথায়, ‘‘আমাদের শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ রাখার জন্য নাগরিকদের মানসিকতা পরিবর্তন করার লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে।’’ কাজও হয়েছে তাতে। এখন রাস্তার পাশের চিত্রিত দেওয়ালগুলি ক্রমশই পটনার ‘সেলফি স্পট’ হয়ে উঠছে।