Narendra Modi

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে রসিকতা করলেই শাস্তির পক্ষে সওয়াল মোদীর

বারাণসীর জনসভা থেকে স্পষ্ট, ভারতীয় রেলের প্রযুক্তিগত বিষয়ের সঙ্গে দেশপ্রেমের আবহ সুকৌশলে জড়িয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবং এই ধরনের ঘটনা আটকাতে পরোক্ষ ভাবে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন তিনি। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন অংশে আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে মোদীর এই বার্তা সেই সব ঘটনায় ইন্ধন দিতে পারে, এমনটাই দাবি করছে বিভিন্ন মহল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বারাণসী শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:২৯
Share:

নয়াদিল্লিতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

দেশের প্রথম ইঞ্জিনহীন ট্রেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে কোনও রকম রসিকতা করা হলে তা আসলে দেশের ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রযুক্তিবিদদের অপমান করা। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত। এমনটাই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীবারাণসীর এক জনসভায় এ ভাবেই এই যুক্তির পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি।

Advertisement

শুরু থেকেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে একের পর এক যান্ত্রিক জটিলতার মুখোমুখি হয়েছে রেল। গত শনিবার উদ্বোধনের দিনেই বারাণসী থেকে দিল্লি ফেরার পথে রাজধানীর ২০০ কিলোমিটার আগেই বিকল হয়ে যায় ওই ট্রেনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। ট্রেনের কন্ট্রোল সিস্টেমে গন্ডগোলের কারণে সাংবাদিক এবং সরকারি আধিকারিক-সহ যাত্রীদের অন্য একটি ট্রেনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছু ক্ষণ পর দিল্লি পৌঁছয় ট্রেনটি। বাণিজ্যিক ভাবে এই ট্রেনটি চালু করা হয়েছিল তার পরের দিন।

বন্দে ভারত এক্সপ্রেস নিয়ে এর পরেই বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ে ভারতীয় রেল। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, অযথা তড়িঘড়ি করে উদ্বোধন করার জন্যই এই বিপত্তি। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘মোদীজি, আমার মনে হয় ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার। বেশির ভাগ মানুষই মনে করেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ব্যর্থ হয়েছে। আমি নিশ্চিত করে আপনাকে জানাচ্ছি, এটা কী ভাবে করা যায়, সেই ভাবনা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে ভাবে কংগ্রেস।’

Advertisement

আরও পড়ুন: ভালবাসার বর্মেই বিদ্বেষ রুখতে চায় কলকাতা

একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব অভিযোগ করেন, ‘‘উদ্বোধনের পরেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ধোঁয়া দেখা গেল, কামরার ভিতরে আলো নিভে গেল, ব্রেকে সমস্যা হওয়ার জন্য ট্রেনও থেমে গেল। বন্দে ভারত আসলে আমাদের দেশের উন্নয়নের আসল ছবি। সঙ্কটে কৃষকেরা, যুবক-যুবতীরা কর্মহীন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ভারতীয় অর্থনীতিও ধসে গিয়েছে।’’

বিরোধীদের সেই সমালোচনার জবাব দিতেই মোদী যেন বেছে নিয়েছিলেন বারাণসীর জনসভাকে। যদিও প্রযুক্তিগত কোনও ত্রুটি নিয়ে তাঁকে কথা বলতে শোনা যায়নি। সমালোচনা করলে শাস্তি পেতে হবে, এই ছিল তাঁর মূল বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘‘সেমি হাই স্পিড ট্রেন নিয়ে অনেকেই রসিকতা করছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আসলে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রযুক্তিবিদদের অপমান করাই এঁদের আসল উদ্দেশ্য। এই সব ব্যক্তিদের নিয়ে জনসাধারণের সচেতন থাকা উচিত। কারণ, প্রযুক্তিবিদ এবং ইঞ্জিনিয়ারদের পাশাপাশি এঁরা আসলে দেশকেও অপমান করছেন।’’ এখানেই থেমে না থেকে বারাণসীর জনসভা থেকে মোদী পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘দেশের প্রযুক্তিবিদ এবং ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে কি রসিকতা করা উচিত? যাঁরা সে সব করছেন, তাঁদের কি ক্ষমা করা উচিত? যাঁরা এই কাজ করছে, তাঁদের কি শাস্তি হওয়া উচিত নয়?’’

আরও পড়ুন: ‘শ্রীনগর নয়, কলকাতায় রয়েছি শুনলেই বেশি শান্তি পান মা’

বারাণসীর জনসভা থেকে স্পষ্ট, ভারতীয় রেলের প্রযুক্তিগত বিষয়ের সঙ্গে দেশপ্রেমের আবহ সুকৌশলে জড়িয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবং এই ধরনের ঘটনা আটকাতে পরোক্ষ ভাবে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন তিনি। পুলওয়ামা কাণ্ডের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন অংশে আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে মোদীর এই বার্তা সেই সব ঘটনায় ইন্ধন দিতে পারে, এমনটাই দাবি করছে বিভিন্ন মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন