Petrol Diesel Price Hike

তেলের দাম নিয়ে হুঁশিয়ারি পেট্রল পাম্প মালিকদের

উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে অন্তত সাতটি জেলার বিভিন্ন জায়গায় লিটার প্রতি পরিবহণ জ্বালানিটির দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ০৬:৩৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

পেট্রলের দামে শুক্রবারই ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে অন্তত সাতটি জেলার বিভিন্ন জায়গায় লিটার প্রতি পরিবহণ জ্বালানিটির দাম ছাড়িয়েছে ১০০ টাকা। তেলের এই দাম নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন জেরবার, তেমনই ক্ষুব্ধ পেট্রল পাম্প ব্যবসায়ীরাও। দামে রাশ টানার ব্যাপারে সরকার ব্যবস্থা না-নিলে আগামী দিনে ধর্না, এমনকি পেট্রল পাম্প ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি শনিবারই কয়েক জন বিরোধী নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ীর ১৯৭৩ সালের একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পেট্রলের দাম ৭ পয়সা বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা তৎকালীন জনসঙ্ঘ নেতা গরুর গাড়িতে চেপে সংসদ ভবনে যাচ্ছেন।

Advertisement

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গেই পেট্রলের দরে ১০০-র গণ্ডিতে পা রাখে কেরল ও পঞ্জাবের কয়েকটি জায়গা এবং চেন্নাই। মেট্রো শহরগুলির মধ্যে শুধু দিল্লি এবং কলকাতায় পেট্রলের তিন অঙ্কে পা রাখা বাকি। এই দুই শহরে জ্বালানিটি ৯৯ টাকা পার করেছে। এ দিন পুরুলিয়ার বান্দোয়ানেও পেট্রল ১০০.০২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মানবাজার ২-এর আঁকরোয় ১০০.১০ টাকা, বলরামপুরে ১০০.৩২ টাকা এবং ঝালদায় ১০০.৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে পেট্রোপণ্যটি। পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের ছড়রা (৯৯.৯২), পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০এ) জাতীয় সড়কের গেঙ্গাড়া (৯৯.৯৭), কাশীপুর ও মানবাজারেও (৯৯.৭৭) তা ১০০ ছুঁইছুঁই।

পেট্রল পাম্পের মালিকেরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, তাঁরা তেলে লিটার পিছু কমিশন পান। দাম বৃদ্ধির ফলে জ্বালানির বিক্রি কমায় তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এ দিন বিকেলে ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন। পরে সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন জানান, কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে যথাক্রমে তেলের উৎপাদন শুল্ক এবং ভ্যাট কমানোর দাবি জানিয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। লকডাউন পুরোপুরি উঠলে দর বৃদ্ধির প্রতিবাদে ধর্নায় বসবেন তাঁরা। তাতেও কাজ না-হলে ৪৮ ঘণ্টার জন্য পেট্রল পাম্প ধর্মঘট ডাকা হবে। সেই সময়ে তাঁরা সংস্থাগুলির কাছ থেকে তেলও কিনবেন না। প্রসেনজিৎবাবু জানান, অত্যাবশ্যক পণ্য আইন অনুযায়ী ধর্মঘট করতে হলে তার অন্তত ২১ দিন আগে সরকারকে জানাতে হয়। ফলে এখনই সেই পদক্ষেপের সুযোগ নেই। তবে রাজ্যের যে সমস্ত জায়গায় যে দিন পেট্রলের দাম ১০০-র গণ্ডিতে পা রাখবে, সেখানে সে দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আলো নিভিয়ে রাখা হবে। যে কর্মসূচি ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন তাঁরা।

Advertisement

পুরুলিয়া জেলার পেট্রল পাম্প মালিক সংগঠনের তরফে প্রদ্যুৎকুমার দাসের কথায়, ‘‘দুর্গাপুরের রাজবাঁধ এলাকায় এ অঞ্চলের পেট্রল মজুত হয়। সেখান থেকে জেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থার পাম্পে পৌঁছে দেওয়া হয় তেল। রাজবাঁধ থেকে সংশ্লিষ্ট পাম্পের দূরত্বের উপরেই দাম নির্ভর করে। তাই জেলার এক এক জায়গায় দাম এক এক রকম।’’
এ দিন তেলের দাম অপরিবর্তিত ছিল। কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে পেট্রল ও ডিজেল বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৯৯.০৪ টাকা এবং ৯২.০৩ টাকায়। তবে কেন্দ্রের উদ্দেশে বিরোধীদের কটাক্ষে বিরতি নেই। বাজপেয়ীর ভিডিয়ো পোস্ট করে কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর লিখেছেন, ‘‘১৯৭৩ সালে পেট্রলের দাম ৭ পয়সা বাড়ার সময়ে বিরোধীদের প্রতিবাদের একটি দুর্লভ ফুটেজ। অটলবিহারী বাজপেয়ী গরুর গাড়ি করে সংসদ ভবনে পৌঁছেছেন। যানবাহন প্রবেশের ক্ষেত্রে এখনকার বিধিনিষেধের ফলে যা আজকের দিনে সম্ভব নয়।’’ তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন লিখেছেন, ‘‘ইতিহাস! ১৯৭৩ সালে পেট্রলের দাম যখন সামান্য (৭ পয়সা) বাড়ানো হয়েছিল, সেই সময়ে প্রতিবাদে গরুর গাড়ি করে সংসদে ভবনে পৌঁছেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন