কাছাকাছি: ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুললেন ফুলবাড়ি সীমান্তে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
ফুলবাড়ি কি ওয়াঘা সীমান্তের মতো হয়ে উঠতে পারবে! শুক্রবার বিকাল থেকে এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খেল যৌথ মহড়া দেখতে যাওয়া দুই পারের বাসিন্দাদের অনেকেরই মনে। ফুলবাড়ি ব্যাটালিয়ন মোড় বাজার থেকে মহড়া দেখতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গিয়েছিলেন, মহম্মদ নিজাম, সুবীন গুণ, কাইজার বর্মনেরা। তাঁরা বললেন, ‘‘অনেকের মুখেই শুনেছি ওয়াঘা সীমান্ত না কি পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র। মহড়া দেখার জন্য গিয়ে একবেলা কেটে যায়। বড় গ্যালারি, রেস্তোরা, পার্ক কী নেই। এখানে তো এখনও কিছুই তেমন হয়নি।’’
মহড়ার কথা সংবাদপত্রে, টিভিতে দেখে খুবই উৎসাহী ছিলেন হাকিমাপাড়ার সুব্রত সরকার, নীলোৎপল দাসেরা। বাইক রেখে দূর থেকে পরিস্থিতি দেখে ফিরেছেন। তাঁরা জানান, ফুলবাড়িতে যৌথ মহড়া চালু হল ঠিকই, তবে পরিকাঠামো আর একটু বাড়িয়ে তা চালু হলে ভাল হত। এখন লোহার যে অস্থায়ী গ্যালারি তৈরি হয়েছে, তাতে শতাধিক বাসিন্দাদের বেশি তো বসতেই পারবে না। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিষয়টি দ্রুত ভাবা দরকার।
বিএসএফের উত্তরবঙ্গের ডিআইজি জর্জ মঞ্জুরানের কথায়, ‘‘সবে তো দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তিতে মহড়া শুরু হল। বাসিন্দাদের মতো আগ্রহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিকাঠামোও বাড়বে। রাজ্য সরকারও বিষয়টি দেখছে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, বছর দু’য়েক আগেই রাজ্য পর্যটন দফতর ফুলবাড়িতে সীমান্তকে ওয়াঘার মতো গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়, সামগ্রিক পরিকাঠামোর কাজ করেই যৌথ মহড়া চালু হবে। এর জন্য সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অন্তত ১০ একর জমির প্রয়োজন। জমি খোঁজা শুরুও হয়। কিন্তু অধিকাংশ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি হওয়ায় প্রক্রিয়া কিছুটা থমকে। ইচ্ছুকদের জমির ক্ষতিপূরণ বা কীভাবে কোন দরে জমি কেনা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব উদ্যোগী হয়ে ভিন্ রাজ্যের ইঞ্জিনিয়রদের দিয়ে প্রস্তাবিত পর্যটন কেন্দ্রের একটি নকশাও তৈরি করাচ্ছেন। ওই সংস্থাই উত্তরকন্যার কাজ করেছে।
অন্তত হাজার পাঁচেক লোক বসার পাকা গ্যালারি, এক হাজার গাড়ির পার্কিং, মিউজিয়াম, রেস্তরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া ছাড়াও শিশুদের বিনোদন পার্কের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এলাকার পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিধির জন্য কোনও মন্ত্রীই অনুষ্ঠানে যাননি। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যও করতে চাননি। তবে জেলা প্রশাসনের এক অফিসার জানান, জমির সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যাল জানান, ফুলবাড়িকে পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়া হলে শিলিগুড়ি নিয়ে আগ্রহ আরও বাড়বে।