(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। (ডান দিকে) কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নে। —ফাইল চিত্র।
জি৭ সম্মেলনে ভারত যোগ দেবে কি না, এ নিয়ে জল্পনার মাঝেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নে। দুই দেশের চাপানউতরের মাঝে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, তিনি বৈঠকে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী। শুক্রবার সমাজমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর ফোন পেয়ে তিনি আনন্দিত এবং নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত, কার্নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে সরকারি ভাবে এটাই মোদীর সঙ্গে তাঁর প্রথম আলাপ এবং আলোচনা।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নের ফোন পেয়ে আমি আনন্দিত। সাম্প্রতিক নির্বাচনে জয়ের জন্য তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি এবং জি৭ বৈঠকে আমায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি তাঁকে।’’ মোদী আরও লেখেন, ‘‘এই মাসের শেষে কানানাস্কিসে জি৭ বৈঠকে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে উন্মুখ।’’
আগামী ১৫ থেকে ১৭ জুন ৫১তম জি৭ সম্মেলন। এ বার সম্মেলনের আয়োজক দেশ কানাডা। রীতি অনুযায়ী, আয়োজক দেশ জি৭ জোটের বাইরে থাকা কিছু দেশকেও বৈঠকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু এত দিন ভারতের কাছে কানাডার তরফে এমন কোনও আমন্ত্রণ না আসায় জল্পনা তৈরি হয়েছিল। আর তা তীব্র হয় বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়ায়। কারণ, বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা না করেই কংগ্রেস দাবি করেছে জি৭ সম্মেলনে মোদীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটি ভারতের আরও একটি কূটনৈতিক ব্যর্থতা বলে দাবি করে তারা। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “২০১৪ সালের আগে জি৭ আসলে রাশিয়াকে সঙ্গে নিয়েছিল জি৮। সেখানে মনমোহন সিংহকে ডাকা হত, তাঁর কথা শোনা হত। ২০০৭ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত এমনই এক সম্মেলনে, জলবায়ু পরিবর্তনের নিয়ে বিখ্যাত সিংহ-মের্কেল সূত্র তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গত ছ’বছরে এই প্রথম কানাডায় সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না বিশ্বগুরু। যে প্যাঁচই দেওয়া হোক না কেন এটা আরও একটি কূটনৈতিক বিপর্যয়। এর আগে ভারতের বহু দিনের বিদেশনীতিকে আমেরিকার হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারাই নাকি ভারত পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করেছে বলে ক্রমাগত প্রচার করছে।’’
উল্লেখ্য, কার্নের পূর্বসূরি জাস্টিন ট্রুডোর জমানায় খলিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদে কানাডার মদত ঘিরে নয়াদিল্লি এবং অটোয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। তার পরে কানাডায় জি৭ বৈঠকে ভারত ডাক পাবে কি না, এ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। তবে মোদী জানিয়েছেন, ভারত এবং কানাডা পারস্পরিক শ্রদ্ধা বজায় রেখে নয়া উদ্যমে একসঙ্গে কাজ করবে।