PM Narendra Modi at Ram Mandir

রামরাজ‍্যের অনুপ্রেরণায় তৈরি হবে ‘বিকশিত ভারত’! মোদীর ঘোষণা রামমন্দির চত্বর থেকেই, বললেন, ভারত গণতন্ত্রের জননী!

আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মোদী। ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেই দেশ গড়া হবে ‘রামরাজ্য’ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই। সঙ্গে দাসত্বের মানসিকতা থেকে মুক্তির বার্তাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৩০
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রতীকী ধ্বজা তুলে দিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: পিটিআই।

২০৪৭ সাল, অর্থাৎ ভারতের স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তির আগেই গড়া হবে ‘বিকশিত ভারত’। আর তা গড়ে উঠবে রামরাজ্যের আদলে! অযোধ্যায় রামমন্দিরের ধ্বজারোহণের পর এমনটাই জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

মঙ্গলবার মার্গশীর্ষ মাসের শুক্ল পক্ষের পঞ্চমী তিথি। পুণ্য অভিজিৎ-মুহূর্তে রামরাজ্যের প্রতীকস্বরূপ বিশালাকার ওই পতাকা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে উত্তোলন করেন মোদী। সঙ্গে ছিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাজ্যপাল আনন্দীবেন পটেলও উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। ‘ধ্বজারোহণ’ অনুষ্ঠানের পর একে একে আদিত্যনাথ, ভাগবত এবং মোদী ভাষণ দেন। আবেগতাড়িত হয়ে স্পষ্টতই কাঁপতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর হাত। মোদী বলেন, ‘‘আজ সারা পৃথিবী রামময়! কত শতাব্দীর ক্ষত আজ পূরণ হল! কত শতাব্দীর সংকল্প আজ পূর্ণতা পেল! ৫০০ বছরের যজ্ঞ ও সাধনার ফল এই মন্দির। এত বছর ধরে সেই যজ্ঞাগ্নি নির্বাপিত হয়নি।’’

মোদীর কথায়, এই ধ্বজা কেবল ধ্বজা নয়, বরং ভারতীয় সভ্যতার ‘নবজাগরণের’ প্রতীক। এই ধ্বজা সঙ্কল্পের, সাফল্যের, সংঘর্ষের, স্বপ্নপূরণের। ভেদাভেদ এবং পীড়া থেকে মুক্তির। মোদী বলেন, ‘‘রামমন্দিরে এলে সকলে সপ্তমণ্ডপমে আসবেন। এই মণ্ডপগুলি বিশ্বাস, বন্ধুত্ব এবং সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। আমাদের রাম ভেদাভেদ নয়, সদ্ভাবে প্রসন্ন হন। বংশ, কুল নয়, ভক্তিতে প্রসন্ন হন। আজ আমরাও এই ভাবনা নিয়েই এগোচ্ছি। গত ১১ বছরে নারী, দলিত, আদিবাসী, বঞ্চিত, কৃষক, যুবক— সব বর্গকে বিকাশের কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। একদিন দেশের সব ক্ষেত্রে, সব মানুষের বিকাশ হবে। সে দিন বেশি দূরে নেই। এর জন্য সকলের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। আমরা এমন সমাজ গড়ব, যেখানে কোনও দারিদ্র, দুঃখ থাকবে না।’’

Advertisement

আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যেই এই ‘বিকশিত ভারত’ গড়ার কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মোদী। ইঙ্গিত দিয়েছেন, সেই দেশ গড়া হবে ‘রামরাজ্য’ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েই। মোদী বলেন, ‘‘আজকের দিনে অযোধ্যা মানবতার বিকাশের ‘মডেল’ হয়ে উঠেছে। কোটি কোটি মানুষ এই পুণ্যভূমিতে এসেছেন। স্থানীয়দের আয় বেড়েছে।’’ রামভূমি থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারতও অচিরেই পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে বলে জানিয়েছেন মোদী।

রামমন্দিরের সদ্যস্থাপিত পতাকাটিও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ১০ ফুট উঁচু এবং ২০ ফুট দীর্ঘ ওই গেরুয়া পতাকায় সূর্য, ওঁ চিহ্ন এবং দেবকাঞ্চন গাছের প্রতীক রয়েছে। অতীতে ওই প্রতীকগুলি সূর্যবংশের পতাকায় ব্যবহার হত। মেবারে রামায়ণের একটি চিত্র নিয়ে গবেষণার সময় ওই পতাকার খোঁজ পান ভারততত্ত্ববিদ ললিত মিশ্র। সেই আদলেই রামমন্দিরের পতাকাটি তৈরি করা হয়েছে। নাগর স্থাপত্যরীতিতে তৈরি একটি শিখরের চূড়ায় ৪২ ফুট দীর্ঘ দণ্ডের উপর বসানো হয়েছে ওই পতাকা। তিন কিলোমিটার দূর থেকেও তা দেখা যাবে। মঙ্গলবার পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে রামমন্দিরের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘শেষ’ হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্দির কমিটি।

২০২৭ সালে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার দেড় বছর আগে রামমন্দিরের পতাকা স্থাপন করে গেলেন মোদী! ঠিক এ ভাবেই ২০২২ এর নির্বাচনের দু’বছর আগে, ২০২০ সালের ৫ অগস্ট মোদী রামমন্দিরের ভূমিপুজো করে গিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ২২ জানুয়ারি রামলালার বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠাও হয়। অবশ্য তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। এত করেও লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি। উল্টে খাস অযোধ্যার ফৈজ়াবাদ কেন্দ্রেই হেরে গিয়েছেন বিজেপির প্রার্থী। অনেকের মতে, এই ফলাফলের নেপথ্যে বিজেপি-আরএসএসের দূরত্বও ছিল অন্যতম কারণ। সেই আবহে এ বার এক মঞ্চ থেকে একই বার্তা দিলেন মোদী-ভাগবত! একে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনীতিজ্ঞ মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement