Odisha Tribal Student Murder

ওড়িশায় আদিবাসী পড়ুয়া খুন: গ্রেফতার স্কুলের কর্তা, শিক্ষক-সহ আট! পাকড়াও দুই নাবালক সহপাঠীও

এক দল পড়ুয়াই ওই ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। বালতি দিতে না চাওয়ায় তিন সহপাঠী মিলে ওই পড়ুয়াকে খুন করে বলে অভিযোগ। সেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:১৮
Share:

ভুবনেশ্বরে পড়ুয়া খুনের মামলায় স্কুলের আট কর্মী এবং আধিকারিক গ্রেফতার। — প্রতীকী চিত্র।

ওড়িশায় আদিবাসী পড়ুয়াকে খুনের তদন্তে স্কুলের আট কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধরা হয়েছে তিন নাবালককেও। স্নানের বালতি নিয়ে বচসার কারণে ওই পড়ুয়াকে খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের।

Advertisement

সম্প্রতি ভুবনেশ্বরের এক অবৈতনিক আবাসিক স্কুল কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ সোশাল সায়েন্স-এ রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় নবম শ্রেণির পড়ুয়ার। পরে জানা যায়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। বস্তুত, এই স্কুলটি ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ শিল্পপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি শাখা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

ভুবনেশ্বরের পুলিশ কমিশনার এস দেব দত্ত জানান, ১৪ বছর বয়সি ওই আদিবাসী পড়ুয়ার সঙ্গে বচসা হয়েছিল তিন সহপাঠীর। নিহত পড়ুয়া স্নান করার জন্য যে বালতিটি ব্যবহার করত, সেটি নিতে চেয়েছিল অপর তিন পড়ুয়া। রাজি না হওয়ায় তিন নাবালক মিলে ওই পড়ুয়াকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। পরে সেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুলিশ কমিশনার জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের স্কুল কর্তৃপক্ষ হুমকি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার কথা কাউকে না জানানোর জন্য বলা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা তথ্যপ্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করেছিলেন। ওই অভিযোগে স্কুলের এক অতিরিক্ত সিইও, দুই শিক্ষক-সহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১১ ডিসেম্বর রাতে। স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে পড়ুয়ার কেওনঝ়ড়ের বাড়িতে ফোন করে বলেছিলেন, তাঁদের সন্তান গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দ্রুত তাঁদের ভুবনেশ্বরে পৌঁছোনোর জন্য বলেন কর্তৃপক্ষ। পরে ভুবনেশ্বরে পৌঁছোলে তাঁদের বলা হয়, পড়ুয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে গিয়ে পরিবার জানতে পারে ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন থেকেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। দেহ নিয়ে কেওনঝ়়ড়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যেরা।

পরে তদন্তে পুলিশ দাবি করে, এক দল পড়ুয়াই ওই ছাত্রকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। পুলিশ কমিশনার জানান, বালতি দিতে না চাওয়ায় তিন সহপাঠী মিলে ওই পড়ুয়াকে খুন করে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে পরিবারকে কিছুই জানাননি। পড়ুয়ার দেহের ময়নাতদন্তে দেখা যায়, তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃতের সহপাঠী এবং হস্টেলের অন্য পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে খুনের বিষয়ে আরও নিশ্চিত হয় পুলিশ।

এর আগে দুই নেপালি পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরেও বিতর্কে জড়িয়েছিল ভুবনেশ্বরের কেআইআইটি। পদক্ষেপ করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-ও। কেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বা আইনি পদক্ষেপ করা হবে না, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তার ব্যাখ্যা চেয়েছিল ইউজিসি। দুই পড়ুয়ার মৃত্যুরহস্য খতিয়ে দেখতে একটি অনুসন্ধানী দলও গঠন করেছিল ইউজিসি। গত মাসেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে এক পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এ বার ফের বিতর্কে জড়াল ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শাখা প্রতিষ্ঠান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement