National News

ফাঁসির আগের রাতে কাসভকে বোরখা পরিয়ে মুম্বই থেকে সরানো হয়েছিল পুণের জেলে

সেই জঙ্গি হানার দশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কাসভের স্থানান্তর নিয়ে এরকম অনেক গোপন কথাই শেয়ার করলেন অভিযানে থাকা মুম্বই পুলিশের এক পদস্থ কর্তা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ২২:০০
Share:

আজমল কাসভ। —ফাইল চিত্র

পরনে বোরখা। রাতের অন্ধকারে জেল থেকে বের করা হচ্ছে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত এক জঙ্গিকে। ‘আন্ডা সেল’ থেকে বের করে বসানো হল পুলিশের একটি গাড়িতে। রওনা দিল পুণের উদ্দেশে। বোরখার আড়ালের সেই কয়েদিই ছিল আজমল আমির কাসভ২৬/১১ মুম্বই হামলায় ধরা পড়া একমাত্র জঙ্গি।

Advertisement

সেই জঙ্গি হানার দশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কাসভের স্থানান্তর নিয়ে এরকম অনেক গোপন কথাই শেয়ার করলেন অভিযানে থাকা মুম্বই পুলিশের এক পদস্থ কর্তা। ‘পার্সেল রিচড ফক্স’। মুম্বই পুলিশের শীর্ষ কর্তা থেকে স্বরাষ্ট্র দফতর—এই ক’টি কোড শব্দেই বুঝে গিয়েছিলেন, নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছে জঙ্গি। জানাচ্ছেন ওই কর্তা।

২০ নভেম্বর ২০১২। পরের দিন ভোরেই ফাঁসি হবে কাসভের। মুম্বই থেকে পুণে। প্রায় তিন ঘণ্টার যাত্রাপথ। এক দিকে যেমন সময়ের আগে পৌঁছতে হবে, তেমনই যাত্রাপথ হতে হবে মসৃন, নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন। তার উপর স্পর্শকাতর এমন হস্তান্তর প্রক্রিয়া থাকতে হবে সম্পূর্ণ গোপন। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যোগাযোগ, সমন্বয় রক্ষা পুরোটাই হয়েছিল কোড ল্যাঙ্গুয়েজ বা সাঙ্কেতিক শব্দবন্ধ দিয়ে। বলছেন ওই পুলিশকর্তা।

Advertisement

আরও পুড়ুন: অযোধ্যা মামলা দেরি করাচ্ছে কংগ্রেস, চাপ কমানোর চেষ্টা মোদীর

তিনি জানাচ্ছেন, আর্থার রোড জেলের ‘আন্ডা সেল’ থেকে যাত্রা শুরুর আগেই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছিল। মুখবন্ধ একটি ব্যাগে রাখা হয়েছিল সেগুলি। শুধুমাত্র দু’টি ওয়াকিটকি ছিল কাসভের ভ্যানে। তিনি বলেন, ‘‘ফোর্স ওয়ান’ কমান্ডোরা অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বসেছিলেন কাসভের গাড়িতে। মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যখন গাড়ি এগোচ্ছিল, তার কিছুটা পিছনে ‘ফলো’ করছিল মহারাষ্ট্র রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের একটি গাড়ি। কারও সন্দেহ এড়াতেই ওই গাড়ি কিছুটা পিছনে ছিল।’’

সাত দিন আগেই ফাঁসির পরোয়ানা ধরানো হয়েছিল কাসভকে। জেনে গিয়েছিল ফাঁসির দিনও। ফলে মুম্বই থেকে পুনে নিয়ে যাওয়ার সময়ই কাসভ জেনে গিয়েছিল, পরের দিনের সূর্য সে আর দেখবে না। তাহলে তখনও কি কাসভের মধ্যে কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করেননি?

আরও পডু়ন: মার্কিন পর্যটক অ্যালেন চাওয়ের দেহ উদ্ধার কি আদৌ সম্ভব, ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে

‘‘তিন ঘণ্টায় একটাও কথা বলেনি কাসভ। এমনকী আচার-ব্যবহারেও কোনও পরিবর্তন দেখিনি।’’ বললেন ওই পুলিশকর্তা। আরও যোগ করেন, ‘‘ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত এমন এক কয়েদিকে হস্তান্তর ছিল বিরাট গুরুদায়িত্ব।’’

অবশেষে কাসভকে নিয়ে ভোর তিনটেয় ইয়েরওয়াড়া জেলে পৌঁছন তাঁরা। তারপরই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয় ‘পার্সেল রিচড ফক্স’। আর অভিযানে থাকা পদস্থ কর্তারা মোবাইল ফোন হাতে পান পরের দিন ২১ নভেম্বর। ততক্ষণে গোটা বিশ্ব জেনে গিয়েছে, ফাঁসি হয়ে গিয়েছে আজমল আমির কাসভের। ভোর পাঁচটায়।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন