ফাইল চিত্র।
সবে বাংলাদেশ পুলিশ হাতকাটা নাসিরুল্লা ওরফে সোহেল মাহফুজের গ্রেফতারির কথা ঘোষণা করেছে। দিল্লি থেকে ফোনে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র এক কর্তা উচ্ছ্বসিত স্বরে বললেন, ‘‘নাসিরুল্লার সঙ্গে আরও তিন জঙ্গি ধরা পড়েছে। মনে হচ্ছে, ওদের মধ্যে তালহা শেখও রয়েছে। নাসিরুল্লার জুড়ি এই তালহা।’’ যখন জানা গেল ধৃতদের মধ্যে তালহা ওরফে শ্যামল নেই, কিছুটা হতাশই হলেন ওই গোয়েন্দা-কর্তা। বললেন, ‘‘হল না। এখন নাসিরুল্লার কাছ থেকেই তালহার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে!’’
ঢাকায় জঙ্গি-দমন শাখার আর্জিতে নাসিরুল্লার পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ আরও ছ’দিন বাড়িয়েছে আদালত। সোমবার নাসিরুল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ঢাকায় পৌঁছনো এনআইএ দলের প্রধান কাজগুলোর একটা হল, তালহার হদিস পাওয়া। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার ‘অন্যতম প্রধান চক্রী’ তালহার হদিস পেতে এনআইএ ১০ লক্ষ টাকা ইনাম ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের দিনাজপুরের বাসিন্দা তালহার আসল নাম শ্যামল।
এনআইএ-র বক্তব্য, নাসিরুল্লার ছায়াসঙ্গী এই শ্যামল বীরভূমের কীর্ণাহার ও বোলপুর এবং নদিয়ার দেবগ্রাম ও থানারপাড়ায় ঘাঁটি গেড়ে জেএমবি-র সংগঠন তৈরি করেছিল। তা ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গের দুই পড়শি রাজ্য অসম ও ঝাড়খণ্ডেও ওই জঙ্গি সংগঠনের প্রভাব বিস্তার করার পিছনে শ্যামলের অবদান আছে।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, অসমের বরপেটার সারথেবাড়ি এলাকার চাতলা গ্রামে কয়েক বছর গা ঢাকা দিয়ে ছিল শ্যামল। ওই তল্লাটের এক মহিলাকে সে বিয়ে করে। যেটা ওখানে জঙ্গি সংগঠন তৈরির কাজে সহায়ক হয়েছিল। নাসিরুল্লার নির্দেশেই শ্যামল এই কাজ করে। বাংলাদেশের নাগরিক শাকিল গাজীও নাসিরুল্লার নির্দেশে নদিয়ার করিমপুরে ঘাঁটি গাড়তে সেখানকার রাজিয়া বিবিকে বিয়ে করে।
স্থানীয় জামাই হিসেবে শাকিল সহজে ওই এলাকায় জেএমবি-র জাল বিস্তার করেছিল। ২০১৪-র ২ অক্টোবর খাগড়াগ়ড় বিস্ফোরণে কীর্ণাহারের কাফেরপুর গ্রামের আবদুল করিমের সঙ্গে প্রাণ হারায় শাকিলও।
এনআইএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি-র ঘাঁটি গাড়তে গোড়ায় নাসিরুল্লাকে সব চেয়ে বেশি সাহায্য করেছিল এই শ্যামল। আবার নাসিরুল্লার সঙ্গে শ্যামলও আল কায়দা-পন্থী আদি জেএমবি ছেড়ে আইএস-পন্থী নব্য জেএমবি-তে যোগ দেয়। এখানে যদিও শ্যামলকে সবাই তালহা শেখ নামে চিনত।’’