প্রতীকী ছবি।
ফেসবুকের একটি আপত্তিকর ছবি থেকেই অশান্তি ছড়িয়েছিল বসিরহাটে। অশান্তি চলাকালীনও ভোজপুরি সিনেমার ছবিকে বাদুড়িয়ার বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোয় বিজেপি নেত্রী নুপূর শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশে। একই কারণে অতি সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতারও হয়েছেন বিজেপি-কর্মী।
এমন উদাহরণ অসংখ্য। বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে গত তিন বছরে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অশান্তি বাধানোর একাধিক ঘটনা ঘটেছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত মোদীর দল বিজেপি ও তার বিভিন্ন শাখা সংগঠন। বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি রীতিমতো মাইনে করা লোকের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ার বিদ্বেষ ছড়ায়।
এ বার সোশ্যাল মিডিয়ার ‘অপব্যবহার’ রুখতে মোদী সরকারই নতুন নীতি আনতে চলেছে। ওই ‘সোশ্যাল মিডিয়া নীতি’ বা নির্দেশিকায় ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপে কী করা যাবে, কী করা যাবে না, তা বলা থাকবে। মোদী সরকারের দাবি, এর মূল উদ্দেশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অ্যান্টি-ন্যাশনাল’ বা দেশবিরোধী প্রচার আটকানো। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো বা অশান্তি তৈরিতেও বাধা দেওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: হিংসার বিরুদ্ধে সরব হুরিয়ত
কিন্তু সেই যুক্তি উড়িয়ে বিরোধীরা বলছেন, মোদী জমানায় বিজেপি বিরোধী কিছু বললেই ‘দেশবিরোধী’ বলে দেগে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে অনেককে হেনস্থাও করা হয়েছে। এ বারে বিরোধীদের মুখ একেবারে বন্ধ করতেই এমন নীতির ভাবনা মোদী সরকারের।
অতীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর বার্তা বা প্রচার আটকাতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ধারা প্রয়োগ করা হতো। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে এই আইনের ধারায় মামলা হয়। সুপ্রিম কোর্ট দু’বছর আগে ৬৬এ ধারাটি খারিজ করে দেয়।
আজ অর্থ মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানতে চান, ৬৬এ ধারা খারিজ হওয়ার পরে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যহার কী ভাবে রোখা হবে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা জানান, এখন তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বদলে ভারতীয় দণ্ডবিধিই প্রয়োগ করতে হচ্ছে। এই ফাঁকফোকর রুখতেই নতুন নীতি তৈরি হবে।