প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশজুড়ে চলছে প্রাথর্না। ছবি: টুইটার।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে দেখে এইমস থেকে কিছুক্ষণ আগেই বেরিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে জরুরি বৈঠকও করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশজুড়ে চলছে প্রাথর্না। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সেই প্রার্থনায় সামিল হয়েছেন। স্কুলছাত্র থেকে ব্যবসায়ী, গৃহবধূ থেকে খেলোয়াড়। জীবনদায়ী ব্যবস্থায় এখন নয়াদিল্লির এইমস হাসপাতালে ভর্তি তিনি। বৃহস্পতিবার সকালেই এক বিবৃতিতে তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানানো হয়েছে। আমজনতার ভিড়ও বাড়ছে এইমসের বাইরে। সেখান থেকে সরানো হয়েছে দোকানপাট। নেতা-মন্ত্রীদের আনাগোনায় ব্যস্ত হয়ে ওঠা এই এলাকা মুড়ে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।
বিজেপির বর্যীয়ান নেতা ও বাজপেয়ীর অনেক দিনের সহযোদ্ধা লালকৃষ্ণ আডবাণী বৃহস্পতিবার সকালে কন্যা প্রতিভা আডবাণীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন এইমসে। দেখে যান বাজপেয়ীকে। জন্মদিনের উত্সব বাতিল করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও সকালে দেখে যান তাঁকে। এদিন সকালে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী, বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ দেখে যান বাজপেয়ীকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও তাঁকে দেখতে যান। ফারুক আবদুল্লা, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাঁকে দেখতে আসেন হাসপাতালে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও এদিন এইমসে ঘুরে যান। আদিত্যনাথ তাঁকে দেশের সবচেয়ে বড় নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেন।
এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে রাজনৈতিক নেতারা চলে আসছেন রাজধানীতে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমত বন্দোপাধ্যায়েরও দিল্লি আসার কথা বৃহস্পতিবার। হাসপাতালে গিয়ে বুধবার তাঁকে দেখে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশজুড়ে চলছে প্রার্থনাও। লখনউয়ে এনডি কনভেন্ট পাবলিক স্কুলে এদিন সকালে প্রার্থনায় বসলেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
প্রসঙ্গত, দুই মাসেরও বেশি এইমসে ভর্তি আছেন বাজপেয়ী। নেফ্রোলজি, কার্ডিওলজি, গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজি এবং পালমোনোলজি বিভাগের চিকিত্সকদের নিয়ে গঠিত একটি মেডিক্যাল টিম নজর রাখছে তাঁর ওপর।
বিজেপি আপাতত সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছে বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া বাজপেয়ীকে তাঁর ৯০তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির ওয়েবসাইটে ‘অটলজী- দ্য জেন্টল জায়ান্ট’ নামে এক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি স্বাধীনতার পর প্রশ্নাতীত ভাবে দেশের সবচেয়ে বড় নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বাজপেয়ীকে। তিনি লিখেছিলেন, “বাজপেয়ী শব্দ নিয়ে খেলতে পারেন। কিন্তু তা সবসময়ই সংযত ভঙ্গিতে। উনি ছিলেন শব্দের যাদুকর। প্ররোচনায় কখনও জড়িয়ে পড়ে অন্যায় কাজ করেননি। সামাজিক সৌহার্দ্যের গুণ উপলব্ধি করেছিলেন। বৃহত্তর জাতীয় সমস্যায় দলের ঊর্ধ্বে ওঠার ক্ষমতা ছিল প্রশংসনীয়।”
আরও পড়ুন: বাজপেয়ী এখনও সঙ্কটজনক, মেডিক্যাল বুলেটিনে জানাল এইমস
আরও পড়ুন: বাজপেয়ীকে নিয়ে তথাগতের বিভ্রান্তিকর টুইট, সমালোচনা ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়