জাতীয় সড়ক বেহাল। তাই সেই রাস্তা দিয়ে শিলচর, হাইলাকান্দিতে দুর্গামুর্তি পাঠাতে পারছেন না করিমগঞ্জের মৃৎশিল্পীরা।
বরাকে করিমগঞ্জের দুর্গাপ্রতিমার চাহিদা রয়েছে। শিলচর, হাইলাকান্দির মতো জেলার বিভিন্ন পুজো কমিটি করিমগঞ্জ থেকে মুর্তি কিনে নিয়ে যান। এই জেলায় তৈরি হয় আড়াই থেকে ৩ লক্ষ টাকা দামেরও প্রতিমা। মৃৎশিল্পীরা জানান, বছর দু’য়েক আগেও করিমগঞ্জ থেকে শিলচরে ১৪-১৫টি প্রতিমা যেত। হাইলাকান্দিতে পাঠানো হতো ৪-৫টি প্রতিমা। কিন্তু এখন শিলচরে যায় ৪-৫টি মুর্তি। হাইলাকান্দিতে ১-২টি।
মৃৎশিল্পী সুজিত পাল জানান, জাতীয় সড়কের বেহাল দশার জন্যই শিলচর-হাইলাকান্দিতে বেশি মৃর্তি পাঠানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘শিলচরের উধারবন্দের উত্তরপাড়া ক্লাব, ইটখলা দুর্গাবাড়ি, কালীমোহন রোড, রাধামাধব রোড, রাইস মিল ক্লাবের মূর্তি করিমগঞ্জেই তৈরি করা হচ্ছে।’’ সুজিতবাবু জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কে করিমগঞ্জ থেকে শিলচরে মূর্তি পাঠানোর ঝুঁকি রয়েছে। গাড়ির ঝাঁকুনিতে মূর্তির ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মূর্তিগুলি পুরোপুরি তৈরি করে পাঠানো হয় না। পরে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে মূর্তিকে সাজিয়ে তোলা হয়। মণ্ডপের তুলির শেষ টান দিয়ে আসেন করিমগঞ্জের শিল্পীরা। জেলার মৃৎশিল্পীদের বক্তব্য, করিমগঞ্জে মৃৎশিল্পের বিশাল বাজার ছিল। বেহাল রাস্তার জন্য তা নষ্ট হচ্ছে। লোকসান হচ্ছে মৃৎশিল্পীদের। তাঁদের বক্তব্য, মূর্তি তৈরির কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছে, কিন্তু মূর্তির দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। অনেক সময় গত বছরের তুলনায় ৪-৫ হাজার টাকা কম নিতে হচ্ছে। কারণ, প্রায় সব ক্লাবই বাজেট কমিয়ে ফেলেছে। কিন্তু মৃৎশিল্পীদের কলকাতা থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসতে এজিএসটি, সিএসটি ফর্ম দাখিল করতে হচ্ছে। তাই তাঁদের উপর করের বোঝাও বেড়ে গেছে। মৃৎশিল্পীর দাবি, বিভিন্নভাবে লাভের পরিমাণ কমে গেলেও, মূর্তির আকার-আয়তন আগের বছরগুলির মতোই রাখতে হচ্ছে।