শিক্ষা মন্ত্রকে সেই তুলসী!
‘কিউঁকি সাস ভি কভি বহু থি’ সিরিয়ালের ‘তুলসী’ হিসেবে নজর কেড়েছিলেন দেশের। গত লোকসভা ভোটে অমেঠীতে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে টক্কর নেওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ভার তুলে দেন তাঁর হাতে। কিন্তু সে বড় সুখের স্মৃতি হয়নি বিজেপি বা আরএসএস-এর কাছে। স্মৃতি ইরানিকে শেষ পর্যন্ত সরিয়ে দিতে হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক থেকে। এখন তিক্ততার স্মৃতি মোছার পালা প্রকাশ জাভড়েকরের।
চলতি মাসেই মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন জাভড়েকর। স্মৃতি-হীন শিক্ষা মন্ত্রকে খোলা হাওয়ার বার্তা দিতে গুরুপূর্ণিমার দিনে তিনি আজ শিক্ষক-সাংসদদের সংবর্ধনার মাধ্যমে ‘গুরুদক্ষিণা’ দিলেন। যে সাংসদেরা এক সময়ে শিক্ষকতা করেছেন, তাঁদের মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর কর্মজীবন নিয়ে একটি সিডি ও একটি করে টবে বসানো তুলসী গাছ উপহার দিলেন তিনি। প্রকাশ্যে কূটকচালি এড়ালেও অনেকেই অবশ্য এই উপহারের মধ্যে গৈরিকীকরণের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন।
উদ্ধত ব্যবহার, সাংসদদের সঙ্গে দেখা না করা, সংসদে বিরোধীদের প্রতি রণং দেহি আচরণ— দু’বছরে নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে স্মৃতির বিরুদ্ধে। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও সঙ্ঘ পরিবারকে। আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাই কিছুটা হলেও মন্ত্রকের নেতিবাচক ভাবমূর্তি পাল্টাতে তৎপর হলেন জাভড়েকর। মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত কাল উভয় কক্ষের প্রায় জনা পঞ্চাশ সাংসদকে তিনি নিজে ফোন করে আজকের অনুষ্ঠানে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এসেছিলেন জনা চল্লিশ। জাভড়েকরের উদ্যোগকে স্বাগতই জানান তাঁরা। অনেকে আশা প্রকাশ করেন যে, জাভড়েকর আসায় মন্ত্রকের ছবি আগের থেকে পাল্টাবে। যদিও শিক্ষার গৈরিকীকরণের প্রশ্নে স্মৃতি যে পথে চলছিলেন, জাভড়েকর যে তা থেকে সরে আসবেন— এমনটা মনে করছেন না তৃণমূলের সুগত বসু বা কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্যরা। বরং মণিশঙ্কর আইয়ারের মতো কংগ্রেস নেতার দাবি, জাভড়েকর আসায় গৈরিকীকরণের গতি আরও বাড়বে। অনুষ্ঠানে জাভড়েকর এ দিন বলেন, ‘‘অনেক সময় সাংসদদের সম্বন্ধে ভুল ধারণা তৈরি হয়। বাস্তবে সংসদের উভয় কক্ষে বহু উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি রয়েছেন। রয়েছেন চিকিৎসক ও শিক্ষক। শিক্ষকদের শ্রদ্ধা জানাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ সংসদ চত্বরে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, সিপি ঠাকুর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ, কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য পি জে ক্যুরিয়েন, তৃণমূলের সুগত বসু, সৌগত রায়রা। বিদেশে থাকার জন্য মুরলীমনোহর জোশী ও অসুস্থতার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ আসতে পারেননি।