Ex Indian President

কোত্থাও যাওয়া নয়, অবসরে লেখার কাজ শুরু করছেন প্রণব

একটি বিশুদ্ধ আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছা রয়েছে, যেখানে থাকবে তাঁর ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক জীবনের অনেক অজানা তথ্য।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ১৫:৪৫
Share:

আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছা রয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের।—ফাইল চিত্র।

আগেই জানিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত সংগ্রহের বই ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যাবেন না রাইসিনা হিল থেকে। দশ নম্বর রাজাজী মার্গে তাঁর নতুন ঠিকানা তাই উপচে পড়ছে। লাইব্রেরি হিসাবে চিহ্নিত ঘরটি ভরে গিয়েছে, প্রায় সব ক’টি ঘরেই রাখতে হচ্ছে বই।

Advertisement

পাঁচ দশকের রাজনৈতিক এবং মন্ত্রিত্বের জীবন থেকে অবসর নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই এই বিপুল সংগ্রহের দেখভাল শুরু করেছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়ে এসেও যেন সেখানকারই গন্ধ পাচ্ছি! ওখানেও তো প্রত্যেক ঘরেই বই।’’

অবসর জীবন কেমন ভাবে কাটাবেন সে বিষয়ে এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসেননি। কিন্তু কয়েকটি বিষয় আজই তৈরি করে নিয়েছেন। প্রণব বলছেন, ‘‘এ পি জে আব্দুল কালাম আমাকে প্রায়ই বলতেন, তুমি যতো পড়ো, ততো লেখো না। এ বার সেই দুর্নাম দূর করতে হবে!’’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি স্থির করেছেন, দু’-একদিনের ‘ছুটি’ কাটিয়ে লেখার কাজ শুরু করবেন। তাঁর লেখা ‘দ্য ড্রামাটিক ইয়ার্স– দ্য ইন্দিরা গাঁধী ইয়ার্স’-এর বাংলা অনুবাদের পান্ডুলিপিটি ইতিমধ্যেই তাক থেকে পেড়ে টেবিলে রেখেছেন। সেটির সম্পাদনা করতে শুরু করবেন। এই বছরেই সেটি প্রকাশিত হওয়ার কথা। পাশাপাশি একটি বিশুদ্ধ আত্মজীবনী লেখার ইচ্ছা রয়েছে, যেখানে থাকবে তাঁর ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক জীবনের অনেক অজানা তথ্য। রাষ্ট্রপতি ভবনের জীবন নিয়েও কলম ধরবেন অবিলম্বে।

Advertisement

নতুন এই ইনিংসে সবচেয়ে বেশি মিস করবেন কাকে? প্রণববাবুর জবাব: ‘‘অবশ্যই ফাইল। বিরোধী দলে থাকার সময়েও দলীয় বিভিন্ন কাগজপত্র, প্রস্তাব, সংসদের প্রশ্নোত্তর তৈরি, খসড়া তৈরির কাজ করতে হয়েছে একটানা। আর মন্ত্রী হিসাবে বিভিন্ন মন্ত্রকের ফাইল। বহু যুগ পরে এই প্রথম আমার সামনে কোনও ফাইল থাকছে না।’’

আরও পড়ুন: শেষ ভাষণেও প্রণবের মুখে সহিষ্ণুতাই

গত এক মাস ধরে একটি গান মাথার ভিতর নড়াচড়া করছে রবীন্দ্রভক্ত প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। ‘কোন খেলা যে খেলবো কখন, ভাবি বসে সেই কথাটাই..!” বর্তমান সময়ে এই গান কি বিশেষ কোনও তাৎপর্য বহন করছে? উত্তর এড়িয়ে গিয়ে প্রণবববাবু বলছেন, ‘‘সুচিত্রা মিত্রকে রবীন্দ্রগানের সম্রাজ্ঞী বলে মনে করি আমি। ওঁর আর কণিকার গাওয়া এই গানটি বার বার শুনছি এখন।’’ কোনও রকম রাজনৈতিক উপদেষ্টা বা পরামর্শদাতার ভূমিকায় যে তিনি থাকবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। লেখালেখির পাশাপাশি একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গঠন করে রাষ্ট্রীয় নীতি সংক্রান্ত আলোচনাচক্র এবং প্রকাশনা তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেটিও সরাসরি নিজের নামে করতে আপত্তি রয়েছে প্রণবের।

একটি বিষয়ে অবসর জীবনের প্রথম দিনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন প্রণববাবু। ‘‘বহু ঘোরাঘুরি হয়ে গিয়েছে আমার। আগে তো বটেই, রাষ্ট্রপতি হয়েও গত পাঁচ বছর গোটা দেশ চষে বেড়িয়েছি। এখন কিছু দিন কোথাও যাবো না।’’ বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু’পা ফেলতেও আপাতত ক্লান্ত লাগছে তাঁর। আগামী ১০ অগস্ট সুগত বসুর একটি গ্রন্থের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে তাঁর। ‘‘সুগতকে বলেছি আমার এই বাড়িতেই বই প্রকাশ অনুষ্ঠানটি করতে। বাইরে কোথাও বেরনোর এখনই ইচ্ছা নেই।’’ জানাচ্ছেন গত পাঁচ দশকে লাগাতার ভ্রমণকারী প্রণব মুখোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন