ইন্দিরাই গ্রহণযোগ্য নেত্রী, বললেন প্রণব

চিকিৎসকের বারণে শেষ মুহূর্তে এলেন না সনিয়া গাঁধী। নেহরু-ইন্দিরার স্মৃতি বিজড়িত তিন মূর্তি ভবনের প্রেক্ষাগৃহে নাটকীয় ভাবে মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন ছেলে রাহুল গাঁধী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:৪৭
Share:

মুহূর্ত: ইন্দিরা গাঁধীর জীবনভিত্তিক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও রাহুল গাঁধী। নয়াদিল্লিতে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

চিকিৎসকের বারণে শেষ মুহূর্তে এলেন না সনিয়া গাঁধী। নেহরু-ইন্দিরার স্মৃতি বিজড়িত তিন মূর্তি ভবনের প্রেক্ষাগৃহে নাটকীয় ভাবে মঞ্চে অবতীর্ণ হলেন ছেলে রাহুল গাঁধী।

Advertisement

প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর জীবনভিত্তিক ‘ইন্ডিয়া’স ইন্দিরা’ স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ ছিল উপলক্ষ। শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা দল বেঁধে হাজির। আর ভিড়ে ঠাসা সেই প্রেক্ষাগৃহে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘দেশবাসীর কাছে আজও কোনও গণতান্ত্রিক দেশের সব চেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রধানমন্ত্রীর নাম ইন্দিরা গাঁধীই।’’ এটা ছিল রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার শেষ লাইন এবং লিখিত বক্তৃতার বাইরে প্রণববাবুর স্বতঃস্ফূর্ত উচ্চারণ।

রাহুলের মুখে তখন স্মিত হাসি। সভাকক্ষে গুঞ্জন— তা হলে কি নরেন্দ্র মোদীর যোগ্যতম প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রচারকে সুকৌশলে খারিজ করে দিলেন প্রণববাবু? ভারতের আরও এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও তখন মঞ্চে। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি লিখিত বক্তৃতার বাইরে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কিছু বললে সেটা তাঁরই বক্তব্য। তাঁর বক্তৃতার কোনও ব্যাখ্যা করা হয় না।

Advertisement

সনিয়া গাঁধী যে আজ আসতে পারবেন না, খোদ বইয়ের সম্পাদক আনন্দ শর্মা থেকে প্রবীণ নেতা গুলাম নবি আজাদ বা অম্বিকা সোনি, অথবা অশোক গেহলট— কেউই জানতেন না সেটা। সনিয়ার আসার কথা ছিল সন্ধ্যা ছটায়। সাড়ে ছ’টা নাগাদ রাহুল গাঁধী এসে জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে মা আসতে পারছেন না। সভানেত্রীর বক্তৃতাটি তিনিই পাঠ করে শোনাবেন। বইটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি। মনমোহন, আনসারি ও প্রণববাবু প্রশাসনে ইন্দিরার বিভিন্ন অবদানের কথা তুলে ধরেন। প্রণববাবু জানাতে ভোলেননি, যে সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী বহুত্ববাদকেই গুরুত্ব দিয়েছেন ইন্দিরা গাঁধী। প্রণববাবু বলেন, ‘‘সঙ্কটেও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল ইন্দিরার।’’ ১৯৭৭-এর জানুয়ারির প্রবল প্রতিকূল পরিস্থিতিকে তিন মাসে বদলে দিয়ে তিনি দেশের একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে জিতিয়ে এনেছিলেন।

সভা শেষে রাষ্ট্রপতির বিদায়ের পরে চা-চক্রে প্রবীণ কংগ্রেস নেতারা বলছিলেন, ‘‘আজকের কংগ্রেসের নবীন নেতা সনিয়া-তনয়কেই সম্ভবত বার্তা দিলেন রাষ্ট্রপতি— যে সিদ্ধান্তই নাও, দ্রুত নাও, দৃঢ় ভাবে নাও। দোলাচলে থেকো না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন