প্রশান্তের খোঁজ দিলেই ৫ লক্ষ! পড়ল পোস্টার

খোঁজ শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের। বালিয়ার এক কংগ্রেস নেতা রীতিমতো পোস্টার ছড়িয়েছেন, প্রশান্তকে দলের বৈঠকে হাজির করতে পারলে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম মিলবে। কীর্তিটি উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সচিব অজয় শর্মার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

বিতর্ক ছড়িয়েছে এই পোস্টার ঘিরে। নিজস্ব চিত্র

খোঁজ শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোরের। বালিয়ার এক কংগ্রেস নেতা রীতিমতো পোস্টার ছড়িয়েছেন, প্রশান্তকে দলের বৈঠকে হাজির করতে পারলে নগদ পাঁচ লক্ষ টাকা ইনাম মিলবে। কীর্তিটি উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সচিব অজয় শর্মার। সন্দেহ নেই, এটি শ্লেষ। তবে তা নিয়ে কোনও রকম লুকোছাপা করেননি অজয়। নিজের হাসিমুখের ছবিও দিয়েছেন পোস্টারে।

Advertisement

ঝুলিতে নরেন্দ্র মোদী, নীতীশ কুমারের জয়ের পালে হাওয়া তোলার কৃতিত্ব। মিডিয়ায় চর্চা, ভোটে জেতানোর জাদু আছে চল্লিশ না পেরোনো এই ভোট-কুশলীর মগজে। এ-হেন প্রশান্তকে উত্তরপ্রদেশের ভোটে কংগ্রেসের রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাহুল গাঁধী। পরে পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ডেরও দায়িত্ব পান প্রশান্ত। পঞ্জাবে প্রবল বাদল-বিরোধী হাওয়ায় ভর করে কংগ্রেস জিতেছে। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ তবু জয়ের অন্যতম কুশলী হিসেবে প্রশান্তকে তাঁর কৃতিত্বের ভাগ দিতে কার্পণ্য করেননি। কিন্তু গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যে, শতাধিক কেন্দ্রে লড়ে কংগ্রেস জোটাতে পেরেছে সাকুল্যে ৭টি আসন। সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পিছনেও অন্যতম কারিগর ছিলেন প্রশান্ত। দল ও জোটের ভরাডুবির জন্য তাঁর জবাবদিহি চান অজয়।

পোস্টারটি নজরে আসতেই তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশে দলের রাজ্য সভাপতি রাজ বব্বর। সাত বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করে রবিবার দল থেকে সাসপেন্ড করেছেন অজয়কে। বব্বর প্রদেশ সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন ভোটের অল্প কিছু দিন আগেই। উত্তরপ্রদেশে দলের সব চেয়ে খারাপ ফলের দায় নিয়ে তিনি নিজেই ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। যদিও অজয়ের পোস্টার নিয়ে তাঁর বক্তব্য, এত জলদি কাউকে দায়ী করা যায় না। দলের ভরাডুবির বাজারেও জিতে আসা ৭ বিধায়ককে নিয়ে বব্বরের গর্বিত মন্তব্য, ‘‘এঁরাই সূর্যের সাতটি ঘোড়া।’’ এরই কাছাকাছি নামের একটি ছবি প্রশংসা কুড়িয়েছিল এক সময়। সন্দেহ সেই, বব্বর সেই স্মৃতি উস্কে আগামী লড়াইয়ের বার্তা দিলেও শব্দের জমকে ভুলছেন না অজয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: কংগ্রেসের সঙ্গে নেই, বিজেপিকে বলে এলেন মুলায়ম

প্রশান্ত কিশোর।

বালিয়ার ওই নেতা নিজের বক্তব্যে অনড়। বলেছেন, ‘‘পোস্টার সরাতে পারেন। প্রশ্নগুলো থাকছেই। এবং দলের অনেকেই এ বার জবাব চান।’’ অজয়ের খেদ, ‘‘ভোটের আগে যা করতে বলেছেন, বিনা প্রশ্নে তা করে গিয়েছি। ঘাম ঝরিয়েছি। ভেবেছিলাম এতেই বুঝি দলের ভাল হবে।’’ অজয়ের বক্তব্য, ‘‘ওই সব পরামর্শদাতাদের আসল ধান্দা হল চটজলদি মোটা টাকা কামিয়ে নেওয়া। এঁদের ভরসা করারই ফল মিলেছে উত্তরপ্রদশে।’’ সন্দেহ নেই, অজয়ে এই মন্তব্যের নিশানা কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুলই। তিনিই তো দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রশান্তকে। যদিও আনুগত্যে খামতি রাখেননি অজয়। কংগ্রেস, সনিয়া গাঁধী ও রাহুল— তিন নামেই ‘জিন্দাবাদ’ লিখতে ভোলেননি পোস্টারের মাথায়।

যাঁদের ঘিরে এত বিতর্ক তাঁদের প্রতিক্রিয়া অবশ্য পাওয়া যায়নি। প্রশান্তও বলতে পারেন, প্রিয়ঙ্কা বঢরা, রাহুল বা নিদেনপক্ষে গুলাম নবি আজাদকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার দাওয়াই দিয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেসই উড়িয়ে দিয়েছে তাঁর ‘প্রেসক্রিশন’। রোগ সারবে কী করে? তবে এমন কিছু বলারও দায় নিচ্ছেন না প্রশান্ত। সচরাচর মিডিয়ায় মুখ দেখান না তিনি। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। আর রাহুল? বর্তমানে বিদেশে। চিকিৎসা-পর্ব মিটলে অসুস্থ মাকে নিয়ে ফিরবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন