প্রতীকী ছবি।
ধর্মান্তরণের প্রমাণ মেলেনি। শুধুমাত্র বজরং দলের অভিযোগের পরই বাতিল করা হল গির্জার একটি অনুষ্ঠান। প্রত্যন্ত কোনও গ্রামে নয়, এ ঘটনা দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পীঠস্থান বলে পরিচিত বেঙ্গালুরুর। ঘটনার পরই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও গোটা বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, অনুষ্ঠান বাতিলের জন্য গির্জা কর্তৃপক্ষকে কোনও রকম চাপ দেওয়া হয়নি।
গত শনিবার ও রবিবার— দু’দিন ধরে শহরের এক গির্জায় একটি প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে যোগ দিতে এসেছিলেন মার্কিন দুই ধর্মপ্রচারকও। কিন্তু, বজরং দলের অভিযোগ ছিল, প্রার্থনাসভার নামে আসলে গরিব হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরণ করা হবে। এ কাজে টাকাও ছড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল ওই কট্টরপন্থী হিন্দু দলের। পুলিশে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করে তারা। তবে ধর্মান্তরণের কথা অস্বীকার করলেও অনুষ্ঠান শুরুর ১২ ঘণ্টা আগে গির্জা কর্তৃপক্ষ ওই অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন।
আরও পড়ুন
মার্কিনদের ঠকিয়ে ১৯২ কোটি টাকার প্রতারণা, ধরা পড়লেন শ্যাগি
এ নিয়ে গত শুক্রবার দুপুরে ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস-এ প্রথম অভিযোগটি দায়ের করেন গিরিশ ভরদ্বাজ নামে এক ব্যক্তি। কর্নাটকে বেড়াতে আসা বিদেশিদের উপর গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন পুলিশের এই শাখা অফিস আধিকারিকেরা। গিরিশ ভরদ্বাজের অভিযোগ ছিল, শহরে বেড়াতে আসা দুই মার্কিন ধর্মপ্রচারক আসলে প্রার্থনাসভায় যোগ দিতে নয়, ধর্মান্তরণের কাজে এসেছে। ফলে ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন তাঁরা। গিরিশের দাবি, “কেবলমাত্র ধর্মীয় প্রচারের জন্য ভারতীয় ভিসার আবেদন করেছেন ওই দুই মার্কিনি। কিন্তু, আসলে ভারতীয় দূতাবাসকেই বিভ্রান্ত করেছেন তাঁরা।” সে দিনই ফের একটি অভিযোগ জমা পড়ে। এ বার বজরং দলের আহ্বায়ক কেশব নায়েক পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, “ধর্মপ্রচার নয়, ওই অনুষ্ঠানের আসল উদ্দেশ্য, সহজসরল হিন্দুদের প্রকাশ্যেই ধর্ম পরিবর্তন করানো। আর এ কাজে টাকার জোরে খাটানো হচ্ছে। এতে হিন্দুদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত আনা হচ্ছে।” অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করে তাঁদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও করেন তিনি। তবে গোটা অভিযোগ অস্বীকার করে অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ ধরনের প্রচারসভা আগেও আয়োজন করা হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে কোনও হিন্দু ধর্মাবলম্বী নন, বরং উপস্থিত সকলেই খ্রিস্টীয় ধর্মের ছিলেন বলে দাবি তাঁদের। তা ছাড়া, অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য তাঁদের প্রত্যেকের থেকে ১০০ টাকা চাঁদা হিসাবেও নেওয়া হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।