President Droupadi Murmu

বিলে সম্মতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি, রাজ্যপালকে কি সময় বেঁধে দিতে পারে সুপ্রিম কোর্ট? শীর্ষ আদালতের ব্যাখ্যা চান মুর্মু

সংবিধানের ১৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে যে কোনও জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। সেই অধিকারবলেই সময়সীমা নির্ধারণ নিয়ে শীর্ষ আদালতের অবস্থান জানতে চেয়েছেন মুর্মু।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ ১১:৩৪
Share:

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। —ফাইল চিত্র।

আইনসভায় পাশ হওয়া বিলে সম্মতি দেওয়া বা না-দেওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শীর্ষ আদালত এই ভাবে সময়সীমা বেঁধে দিতে পারে কি না, সুপ্রিম কোর্টকে চিঠি দিয়ে তা জানতে চাইলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে ১৪ দফা প্রশ্নের উত্তরও চেয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, সুপ্রিম কোর্টের কাছে রাষ্ট্রপতির এই ব্যাখ্যা চাওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এল বৃহস্পতিবার। তার আগের দিনই দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসাবে বিআর গবইকে শপথবাক্য পাঠ করান মুর্মু।

Advertisement

সংবিধানের ১৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে জনস্বার্থ সম্পর্কিত যে কোনও বিষয় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করার অধিকার দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকে। সংবিধানে উল্লিখিত সেই অধিকারবলেই এই সময়সীমা নির্ধারণ নিয়ে শীর্ষ আদালতের অবস্থান জানতে চেয়েছেন মুর্মু। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে।

তামিলনাড়ুর আইনসভায় পাশ হওয়ার পর ১০টি বিল সে রাজ্যের রাজ্যপাল আরএন রবি আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে ওই বিলগুলি রাজ্যপাল পাঠিয়ে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের জন্য। গত এপ্রিল মাসে এই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যপালের আচরণকে ‘বেআইনি’ বলে উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ। আদালতের তরফে বলা হয়, ‘‘এটা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া দরকার, কোনও সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও কাজ না করলে আদালত সেখানে হস্তক্ষেপে বিরত থাকবে না।’’

Advertisement

এই মামলার সূত্রেই রাষ্ট্রপতিতে যে কোনও বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বলে সুপ্রিম কোর্ট। ভারতীয় সংবিধানের ২০১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও বিল গেলে তিনি দু’টি কাজ করতে পারেন। হয় ওই বিলে সম্মতি জানানো, অথবা তা নাকচ করে দেওয়া। কিন্তু সংবিধানে রাষ্ট্রপতির এই কাজের জন্য কোনও সময়সীমা জানানো হয়নি। কিন্তু সংবিধানের ১৪২ নম্বর অনুচ্ছেদ (যেখানে কোনও নির্দেশিকা জারির জন্য শীর্ষ আদালতকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে) অনুসারে রাষ্ট্রপতিকে ওই সময়সীমা বেঁধে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

সংবিধানের ২০০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, রাজ্য আইনসভায় পাশ হওয়া কোনও বিলে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে পারেন, সম্মতি না-দিতে পারেন কিংবা সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে পারেন। পুনর্বিবেচনার জন্য কোনও বিল রাজ্যপাল ফের রাজ্যের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বিলটি ফের আইনসভায় পাশ করানো হলে রাজ্যপালকে অবশ্যই তাতে সম্মতি দিতে হবে। শীর্ষ আদালতের কাছে রাষ্ট্রপতির প্রশ্ন, পাশ হওয়া বিল রাজভবনে যাওয়ার পর রাজ্যপাল কি রাজ্য মন্ত্রিসভার ‘সাহায্য এবং পরামর্শ’ নিতে বাধ্য?

সংবিধানে যেখানে নির্দিষ্ট কোনও সময়ের উল্লেখ নেই, সেখানে বিচারবিভাগীয় নির্দেশ দিয়ে রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দেওয়া যায় কি না, শীর্ষ আদালতের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এ ক্ষেত্রে সংবিধানে রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার কী হবে, সেই উত্তরও চেয়েছেন মুর্মু।

সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের এক্তিয়ার নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দিতেই বিজেপির একাংশের নেতারা মুখ খুলতে শুরু করেছিলেন। সেই সময় শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ নিয়ে সরব হন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমরা এখনও সেই পরিস্থিতিতে আসিনি, যেখানে আপনি রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দিতে পারেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement