অসহিষ্ণুতা: নাম না করে মোদীর তীব্র সমালোচনায় প্রণব মুখোপাধ্যায়

বহুত্ববাদ ও সহিষ্ণুতাই যে ভারতীয় সভ্যতার প্রতীক এবং ঐতিহ্য, সেটা আরও একবার জোরের সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। নাম না করলেও, দেশের নানা প্রান্তের অসহিষ্ণুতার প্রসঙ্গে এ দিন তাঁর কড়া সমালোচনার লক্ষ্য ছিলেন নরেন্দ্র মোদীই।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৬ ১২:১০
Share:

নয়াদিল্লিতে প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন সিংহের স্মরণসভায় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।নিজস্ব চিত্র।

বহুত্ববাদ ও সহিষ্ণুতাই যে ভারতীয় সভ্যতার প্রতীক এবং ঐতিহ্য, সেটা আরও একবার জোরের সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। নাম না করলেও, দেশের নানা প্রান্তের অসহিষ্ণুতার প্রসঙ্গে এ দিন তাঁর কড়া সমালোচনার লক্ষ্য ছিলেন নরেন্দ্র মোদীই। শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অর্জুন সিংহের স্মরণে এক অনুষ্ঠানে এসেছিলেন প্রণববাবু। বক্তব্য রাখতে উঠে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বহুত্ববাদী গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যই হল সহিষ্ণুতা এবং বিরুদ্ধ মতকে সম্মান জানানো।...

Advertisement

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই বিশ্বের দরবারে ভারতের মাথা উঁচু করেছে। কিছু মানুষের কারণে এটাকে নষ্ট করতে দেওয়া উচিত নয়। মত পার্থক্য, তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু এ দেশের ঐক্যের দর্শনকে অস্বীকার করলে হবে না।...

১০৩ কোটির দেশ এই ভারতবর্ষ। ১২২টি ভাষা, ১৬০০টি উপভাষা এবং সাতটি ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বাস করেন।’’

Advertisement

প্রণববাবু আরও বলেন, “ভারতীয় সভ্যতায় বহুত্ববাদের ধারণা শয়ে শয়ে বছরের ফসল। এটাকে নষ্ট হতে দিলে আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রটাই শেষ হয়ে যাবে।”

গাঁধীজিকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “ধর্ম একতার শক্তি। এটাকে কোনও দ্বন্দ্বের শিকার বানানো উচিত নয়।” বিশ্বের দরবারে সর্বধর্মে সহিষ্ণুতার একটা বড় উদাহরণ ভারত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কিছু অঞ্চলে ধর্মীয় হিংসা ক্রমেই মাথা চাড়া দিচ্ছে। এটা যাতে ভয়াবহ আকার নিতে না পারে তার আগেই সতর্ক হওয়া উচিত দেশবাসীর। এ রকম একটা কঠিন পরিস্থিতিকে সামলাতে আইনের শাসন দরকার। প্রণববাবু আরও মনে করিয়ে দেন, গণতন্ত্র শুধু সংখ্যাই নয়, মতৈক্যের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটা শক্ত স্তম্ভ। এখানে অরাজকতাকে কোনও ভাবেই ঠাঁই দেওয়া চলবে না।

শনিবার অর্জুন সিংহ স্মারক বক্তৃতার অনুষ্ঠানে প্রণব মুখোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন সিংহের প্রসঙ্গ তুলে প্রণববাবু বলেন, “গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে একটা মজবুত জাতি গড়ে তুলতে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন অর্জুন সিংহ।” শিক্ষাক্ষেত্রে অর্জুন সিংহের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রণববাবু বলেন, “মৌলানা আবুল কালাম আজাদের পর অর্জুন সিংহই সবচেয়ে বেশি সময় দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি যে নীতি প্রয়োগ করেছিলেন তা একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে।”

আরও পড়ুন...

এই অসহিষ্ণুতা দেশকে কোন পথে নিয়ে যাবে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন